মা-মেয়েকে হত্যা: আদালতে রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন প্রেমিক

নিউজ ডেস্ক:

প্রবাসে থাকা অবস্থায় আলতাফ হোসেনের সঙ্গে পরিচয় হয় গৃহবধূ নুরুন্নাহারের। সেই পরিচয় থেকে জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায়। প্রেমিকার আশ্বাসে ভিসা বাতিল করে দেশে আসেন। ৮ জুন দেশে এলেও পরিবারের কাউকে না জানিয়ে প্রেমিকার বাড়িতে যান আলতাফ। সেখানে প্রতিশ্রুতির ৩ লাখ টাকা দিতে না পারায় আলতাফের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পকেটে থাকা ছুরি দিয়ে নুরুন্নাহারের গলায় আঘাত করেন আলতাফ। ওই সময় চিৎকার দিয়ে মেয়ের রুমে চলে যান ওই গৃহবধূ। ওই সময় মেয়ে ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তী ঘুম থেকে উঠে মাকে বাঁচানোর জন্য মায়ের পিঠের ওপর পড়লে আসামি তাকেও এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন।

বুধবার রাত ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি ওমান প্রবাসী আলতাফ হোসেন। আসামি আলতাফ হোসেন লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চর মেহের গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ৮টা থেকে ১ নম্বর আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম মোসলেহ উদ্দিন মিজান আসামি আলতাফ হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ডের পর আদালতের নির্দেশে তাকে রাত ১১টার দিকে নোয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুধারাম মডেল থানার ওসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম।

তিনি বলেন, নিহত গৃহবধূর স্বামী ফজলে আজিম কচির দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আলতাফকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতে দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

ওসি আরো বলেন, দোষ স্বীকার করে আসামি আলতাফ হোসেন জানান, প্রবাসে থাকা অবস্থায় পরিচয় হওয়া গৃহবধূ নুরুন্নাহারের আশ্বাসে ভিসা বাতিল করে দেশে আসেন তিনি। ৮ জুন দেশে এলেও পরিবারের কাউকে জানাননি আলতাফ। প্রতিশ্রুতির ৩ লাখ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আলতাফের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে আসামি তার পকেটে থাকা ছুরি দিয়ে নুরুন্নাহারের গলায় আঘাত করলে তিনি চিৎকার দিয়ে তার মেয়ের রুমে চলে যায়।

তবে নুরুন্নাহারের মেয়ে প্রিয়ন্তীকে হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল না আসামির উল্লেখ করে বলেন, নুরুন্নাহার তার মেয়ের রুমে যাওয়ার পর সেখানে গিয়ে তার গলায় ও ঘাড়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন আসামি। ওই সময় মেয়ে ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তী ঘুম থেকে উঠে মাকে বাঁচানোর জন্য মায়ের পিঠের ওপর পড়লে আসামি তাকেও এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন। মূলত প্রতারণা করায় নুরুন্নাহারকে হত্যা করে।

উল্লেখ্য, বুধবার সকালে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গুপ্তাংক এলাকার বার্লিংটন মোড়ের নিজ বাসায় নুরুন্নাহার ও তার মেয়ে প্রিয়ন্তীকে কুপিয়ে জখম করা হয়। মা ঘটনাস্থলেই মারা গেলেও হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান মেয়েও। এ ঘটনায় পালানোর সময় আলতাফ হোসেনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।

নিহত নুরুন্নাহার নোয়াখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গুপ্তাংক এলাকার বার্লিংটন মোড়ের মানিক মিয়ার বাড়ির ফজলে আজিম কচির স্ত্রী। প্রিয়ন্তী তাদের মেয়ে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)