শিরোপা জিতে টানা দুই ম্যাচেই হারল বার্সেলোনা

অনলাইন ডেস্ক:

ম্যাচ শুরুর ৮২ সেকেন্ডের মাথায় ডাইভিং হেডে যে গোলটি করলেন আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন, যে কোনো ফুটবলারের জন্য তা মধুর স্বাদের; কিন্তু বার্সেলোনার এই ডিফেন্ডারকে দিল তিক্ততা। নিজের জালেই যে বল পাঠালেন তিনি! শুরুর ওই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারল না তারা। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে লা লিগায় টিকে থাকার আশা জোরাল করল রিয়াল ভাইয়াদলিদ।

ঘরের মাঠে মঙ্গলবার (২৩ মে) রাতে লিগ ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতেছে ভাইয়াদলিদ। দারুণ এই জয়ে রেলিগেশন অঞ্চল থেকে বেরিয়ে এলো তারা। শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার পর যেন জয়ের ক্ষুধা ফুরিয়ে গেছে বার্সেলোনার। তাদের পারফরম্যান্সে সেটাই যে ফুটে উঠল। গত ১৪ মে এস্পানিওলকে হারিয়ে তিন মৌসুম পর আবার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয় শাভির দল। এরপর ১০ দিনের মধ্যে দুই ম্যাচ খেলে দুইটিতেই হারল তারা।

শুরুতেই বার্সেলোনার রক্ষণের অমন গড়বড় করে ফেলা ভীষণ দৃষ্টিকটু। বাঁ দিক থেকে দারউইন মাচিসের বাড়ানো ক্রস ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে হেডে ক্লিয়ার করতে গিয়ে জালে পাঠান ডেনিশ ডিফেন্ডার ক্রিস্টেনসেন। কিছুই করার ছিল গোলরক্ষক মার্ক-টের স্টেগেনের। এগিয়ে গিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে ভাইয়াদলিদ। পরের ১০ মিনিটে আরও কয়েকটি ভালো আক্রমণ করে তারা। ত্রয়োদশ মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণ শাণাতে পারে বার্সেলোনা। কোনাকুনি শট নেন রাফিনিয়া, কিন্তু গোলরক্ষককে এড়াতে পারেননি তিনি।

চ্যাম্পিয়নদের স্তব্ধ করে দিয়ে ২২তম মিনিটে স্পট কিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কাইল ল্যারিন। ডি-বক্সে গনসালো প্লাতাকে বার্সেলোনা ডিফেন্ডার এরিক গার্সিয়া ফাউল করলে পেনাল্টিটি পায় ভাইয়াদলিদ। দুই গোল খাওয়ার পর যেন তেতে ওঠে বার্সেলোনা। পরপর দুই মিনিটে দারুণ সুযোগও পায় তারা; কিন্তু অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় রুখে দেন জর্দি মাসিপ। প্রথমে ৩১তম মিনিটে ক্রিস্টেনসেনের জোরাল হেড ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান তিনি। ওই কর্নারের ফলশ্রুতিতে রবের্ত লেভানদোভস্কির শটও একইভাবে ঠেকান মাসিপ।

দ্বিতীয়ার্ধেও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দারুণ সব আক্রমণ করতে থাকে ভাইয়াদলিদ। চেষ্টা করতে থাকে বার্সেলোনাও, কিন্তু উজ্জীবিত স্বাগতিকদের সামনে সুবিধা করতে পারছিল না লেভানদোভস্কিরা। ৫৯তম মিনিটে ব্যবধান বাড়তে পারতো আরও। ডান দিক থেকে মাচিসের ক্রস টের স্টেগেনকে ফাঁকি দিয়ে দূরের পোস্টে লাগলে বেঁচে যায় বার্সেলোনা। ৭৩তম মিনিটে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা অনেকটাই শেষ হয়ে যায় বার্সেলোনার। দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে স্কোরলাইন ৩-০ করেন প্লাতা। গতিতে সবাইকে পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে ল্যারিন পাস বাড়ান বাঁয়ে, প্রথম ছোঁয়ায় জোরাল শটে টের স্টেগেনকে পরাস্ত করেন একুয়েডরের মিডফিল্ডার প্লাতা। শুরুতে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি, তবে ভিএআরে পাল্টায় সিদ্ধান্ত।

পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান বাড়তে পারতো আরও। তবে লুকাস রোসার শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বাধা পায় পোস্টে। খানিক পর প্লাতার হেড অল্পের জন্য হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। ৮৪তম মিনিটে অবশেষে একটি গোলের দেখা পায় বার্সেলোনা। ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের থ্রু পাস ধরে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটিয়ে দুরূহ কোণ থেকে শটে বল জালে পাঠান লেভানদোভস্কি।

নাটকীয়তার আভাস মিললেও বাকি সময়ে আর তেমন কিছুই করতে পারেনি কাতালান ক্লাবটি। তবে সান্ত্বনার এই গোলে লা লিগায় অভিষেক মৌসুমেই পিচিচি ট্রফি জয়ের দৌড়ে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলেন লেভানদোভস্কি। ৩১ ম্যাচে ২২ গোল তার। পাঁচ গোল কম নিয়ে তালিকায় দুইয়ে করিম বেনজেমা।

৩৬ ম্যাচে ২৭ জয় ও ৪ ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৮৫। ৭২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ। আর রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৭১। মাদ্রিদের দল দুটি একটি করে ম্যাচ কম খেলেছে। ৩৬ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে ১৭ নম্বরে ভাইয়াদলিদ; অবনমন অঞ্চল থেকে ৩ পয়েন্ট উপরে তারা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)