পাচারের সময় কাবিখা প্রকল্পের সাড়ে ১৭ টন চাল জব্দ

অনলাইন ডেস্ক:

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির ১৭.৬৯৫ টন চাল পাচারের সময় জব্দ করেছে পুলিশ। এ সময় একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই সপ্তাহের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) রাতে এ ব্যাপারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী খালিয়াজুরী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সামিন সারওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আমরা রাতেই চাল জব্দ করে নদীর পাড়েই রাখি। সেখান থেকে সকালে থানায় নেয়া হচ্ছে।

খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার জানান, ৩৫৪ বস্তার কথা বললেও নদীর পাড়ে পড়ে গেছে, কিছু নষ্ট হয়েছে। মোবাইল কোর্ট করেছে উপজেলা প্রশাসন। কোথা থেকে কীভাবে চাল নিচ্ছে এগুলো তারা বলতে পারবে। আমরা শুধু আটকের দায়িত্ব পালন করছি মাত্র।

জানা গেছে, শুক্রবার রাতে খালিয়াজুরী উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে নেত্রকোনায় নিয়ে আসার পথে রসুলপুর ধনূ নদী পার হওয়ার সময় প্রথমে স্থানীয়রা ওই চাল আটক করে; পরে পুলিশে খবর দেয়া হয়। এ ঘটনায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সামিন সারওয়ার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে চাল নিয়ে যাওয়া নেত্রকোনা সদরের চল্লিশা রাবেয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. লুৎফর রহমানকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। এ সময় সাজাপ্রাপ্ত মো. লুৎফর রহমান এক লিখিত প্রত্যয়নে উল্লেখ করেন ৩৫৪ বস্তা (১৭.৬৯৫ টন) চাল খালিয়াজুরী খাদ্য গুদাম থেকে তিনি তুলেছেন।

সাজাপ্রাপ্ত মো. লুৎফর রহমান জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রব্বানী জব্বারের দেয়া কৃষি ব্যাংকের এক্টিভ মালটিমিডিয়া নামের অ্যাকাউন্টে নগদ তিন লাখ টাকা জমা দিয়েছেন। পরে ১৪ এপ্রিল এসব চাল উত্তোলন করে দুই লড়িতে নিয়ে আসার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে বলে তিনি লিখিতভাবে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।

এদিকে হাতে আসা ইউএনও স্বাক্ষরিত ছাড়পত্র, পুলিশ, প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প সভাপতি মোহাম্মদ কবির হোসেনের নামে ২.৯২৫ টন চাল ২২ মার্চে ও একই নামে ২ টন চাল গত ১৬ জানুয়ারিতে ছাড় হয়। অন্যদিকে ২২ মার্চে মো. শামীম মিয়া নামে ২.৩ মে.টন চাল ছাড় হয়। নমিতা রানী নামে ১.১৫ টন চাল ২২ মার্চে ছাড় হয়। শিউলি ভৌমিক নামে একটি প্রকল্পের তিন টন চাল গত ১৩ মার্চ ছাড় হয়। একই নামের ২৩ মার্চে ২.৫ ও ১৬ জানুয়ারি ২.৫ টন চাল ছাড় হয়। মো. জাহাঙ্গীরের নামে ১.৩ টন চাল গত ২০ মার্চে ছাড় হয়।

জানা গেছে, প্রকল্পের সভাপতিদের মধ্যে কৃষ্ণপুর আবদুল জব্বার রাবেয়া খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির ও অপর একটি স্কুলের শিক্ষক তিন ছাড়পত্রের সভাপতি শিউলি ভৌমিক। এ ছাড়া শামীম মিয়া, জাহাঙ্গীর ও নমিতা রানী ইউপি সদস্য। অন্যদিকে তিন লাখ টাকা নেয়া ব্যাংক হিসাবধারী এক্টিভ মাল্টিমিডিয়ার সুজন তালুকদার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউডিসি (ডিজিটাল উদ্যোক্তা) ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রব্বানী জব্বারের ভাতিজা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও রুয়েল সাংমা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, টিআরের চাল। মোবাইল কোর্ট করেছে এসিল্যান্ড আটক করেছে। উনাদের জিজ্ঞেস করার কথা বলেন। কিন্তু তার স্বাক্ষরিত এসব ছাড়পত্রগুলোর কথা জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)