তালায় লাগামহীন দাম বৃদ্ধি,বিপাকে প্রান্তিক খামারিরা
ফারুক সাগর:
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় লাগামহীনভাবে পোল্ট্রিফিড ও অন্যান্য খাবারের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন প্রান্তিক খামারিরা। অধিকাংশ খামারি খামার বন্ধ করে দিয়ে অন্য পেশায় নিয়োজিত হতে বাধ্য হচ্ছে। তবে সরকার যদি পোল্ট্রি পালনের সাথে সংশ্লিষ্ট জিনিসের উপর ভর্তুকির সহ খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ দানের ব্যবস্থা করেন তাহলে শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে অনেকে অভিমত ব্যক্ত করেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়,এ উপজেলায় সবমিলে আট শ’র অধিক মুরগির খামার রয়েছে। এদিকে সারাদেশে খামারি পর্যায়ে গড়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। অথচ এক কেজি ওজনের একটি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা। খামারি পর্যায়ে মুরগির দাম কম হলেও ভোক্তা পর্যায়ে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগি। বর্তমানে উপজেলায় ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০-২২০ টাকা। গতসপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৮০-১৯০ টাকা। এছাড়াও দাম বেড়ে সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাইরাসের আক্রমন ও বিভিন্ন সময়ে দরপতনের কারনে বছর দুয়েক আগেও যে সকল পোল্ট্রি খামার বড় ছিলো সেগুলো ছোট করে ফেলেছেন খামারিরা। অনেকেই পোল্ট্রি খামারের জিনিসপত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। খামারিরা এ ব্যবসায় লোকসান গুণে পেশা পরিবর্তন করছেন। অনেকে অন্য পেশাতে না যেতে পেরে এখনো লোকসান গুনছেন।
কুমিরার পোল্ট্রি খামারি কাজী নজরুল ইসলাম হিল্লোল বলেন, খামারে ডিমের উৎপাদন ভালো হলেও খাদ্যে ঔষধপত্রের দাম বেশি হওয়াতে লোকসানে গুনতে হচ্ছে। ডিলারদের কাছ থেকে খাদ্য কিনতে হয়। অন্যদিকে ডিমের যে সঠিক মূল্য রয়েছে তা পাচ্ছি না। লোকসানের মুখে পড়ে ধার দেনা করে ঋণ পরিশোধ করেছি। কেউ আবার এই শিল্প বাদ দিয়ে বিদেশ চলে যাচ্ছে।
বালিয়াদহ আর এক খামারি মুক্তার ফকির বলেন,গত বছর এই সময়ে ফিডফিডের দাম ২২৫০ টাকা ছিল তা এখন ১০০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৩২০০-৩৪০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে মুরগি বাচ্চার দাম গত মাসে ৩২-৩৫ টাকা।চলতি মাসে ১০-১২ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, ১০০০ পিস সোনালি মুরগির খামারে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। সেইসাথে নিজের জোনের হিসাব করলে উৎপাদন খরচ আরও বেড়ে প্রায় ৭০ হাজার টাকা মত খরচ পড়ে। অনেকে এর ফলে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে।
তালা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস বলেন,মুরগির দাম কম হওয়ায়, অনেক খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বন্ধ আছে, তাই এই সংকট তৈরি হয়েছে, তবে অনেকে আবার নতুন করে বাচ্চা তুলছে, সংকট কেটে যাবে। মুরগি ও ডিমের দাম বেশি হওয়ায় নতুন করে খামারিরা চাষ করবে এমনটি আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
Please follow and like us: