শ্যামনগরে প্রধান শিক্ষককে আত্মহনন প্ররোচনা মামলা, আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি সামছুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার আত্মহতনন প্ররোচনা মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে। এলাবাসাীর ব্যানারে শুক্রবার দুপুর দুটোর সময় শ্যামনগরের কৈখালি আশিষ কয়ালের মোড়ে এ কর্মসুচি পালিত হয়।

এদিকে ঘটনার তিন দিনেও কোন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় মৃতের পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মৃতের পরিবারের সদস্যরা রয়েছে নিরাপত্তাহীনতায়।

মানববন্ধন কর্মসুচি চলাকালে বক্তব্য দেন মৃতের স্ত্রী নুরুন্নাহার পারভিন, ছেলে মেহেদী হাসান, স্বাধীন, বুলবুল আহম্মেদ, আবুল কালাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম সভাপতি থাকাকালিন গত বছর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চারজন কর্মচারি নিয়োগ দেওয়া হয়। ত্র“টিপূর্ণ হওয়ায় নিয়োগ বোর্ড আয়া পদে মারুফা খাতুনের আবেদনপত্র বাতিল করে নিয়োগ বোর্ড।

আবেদনপত্র বাতিলের দোষ প্রধান শিক্ষক আবুল বাশারের উপরে চাপিয়ে দিয়ে তিনজন শিক্ষক ও তিনজন অভিভাবক সদস্য পরিকল্পিতভাবে মারুফাকে দিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণের চেষ্টা ও টাকা আত্মসাতের মামলা করান। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম নতুন কমিটির সভাপতি হওয়ার পর থেকে হয়রানি করতে থাকেন আবুল বাশারকে।

পরে তাকে বাঁচানোর নামে বিরোধ মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলে শিক্ষক আব্দুল মজিদ, সহকারি শিক্ষক সালাহউদ্দিন, শিক্ষক আব্দুল মান্নান , অভিভাবক সদস্য মারুফা খাতুন ও জাকির হোসেনের যোগসাজসে বর্তমান সভাপতি আব্দুর রহিম ও অভিভাবক সদস্য আলী মোর্তুজা প্রধান শিক্ষকের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। প্রধান শিক্ষক তাদেরকে স¤প্রতি পাঁচ লাখ টাকাও দেন। বাকী ৪৫ লাখ টাকার জন্য আলী মোর্তুজাসহ অন্যান্যরা প্রধান শিক্ষককে চাপসৃষ্টি ও হুমকি অব্যহত রাখে।

এতে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রধান শিক্ষক সভাপতির কাছে ছুটি চান। সভাপতি তা মঞ্জুর না করে গত ২ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষককে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেন। এতে প্রধান শিক্ষক মানসিক হারসাম্য হারিয়ে ফেলে বুধবার গোপালপুরে তার ভ্য়ারা ভাই ইটালী প্রবাসী আবু সাঈদের বাড়ির ভাড়া বাসার সামনে আমগাছে গলায় তোয়ালের ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।

এ ঘটনায় মৃতের স্ত্রী সভাপতি আব্দুর রহিমসহ সাত জনের নাম উলে­খ করে বুধবার রাতে থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে মামলা করেন। কিন্তু ঘটনার তিন দিন পার হয়ে গেলেও পুলিশ কোন অসামীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফলে দুই শিক্ষার্থী সন্তানকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন নুরুন্নাহার পারভিন। মানববন্ধন থেকে আসামীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক রেজাউল করিম জানান, আসামীরা এলাকার বাইরে অবস্থান করায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)