ডায়াবেটিসের রোগীর স্ট্রোক ঝুঁকি দেড় থেকে দুই গুণ

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

দেশে স্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে ব্রেইন স্ট্রোকে মারা গেছেন ৮৫ হাজার ৩৬০ জন, যা আগের বছর (২০১৯ সাল) ছিল ৪৫ হাজার ৫০২ জন। চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিসের রোগীর স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি দেড় থেকে দুই গুণ বেশি।

বিশ্বব্যাপী স্ট্রোকের এমন পরিস্থিতিতে শনিবার (২৯ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। স্ট্রোক সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতি বছর ২৯ অক্টোবর বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উদযাপিত হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব স্ট্রোক দিবস পালন করা হচ্ছে। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য- ‘না করলে সময়ক্ষেপণ, স্ট্রোক হলেও বাঁচবে জীবন’।

এ বিষয়ে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. রুমানা হাবিব বলেন, ডায়াবেটিসের রোগীর স্ট্রোক ঝুঁকি দেড় থেকে দুই গুণ বেশি। এই ঝুঁকি বেশি হওয়ার কারণ হলো যে প্রত্যেক ডায়াবেটিস রোগীর উচ্চ রক্তচাপ থাকে। তাদের কোলেস্টেরল বেশি হওয়ার আশঙ্কা এবং ওজনজনিত সমস্যা থাকার কারণেও আশঙ্কা বেশি। এ ধরনের রোগীর বয়স যদি আবার ৫৫ বছরের বেশি হয় এবং ধূমপান ও অ্যালকোহলের অভ্যাস থাকে, তাহলে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি আরও বাড়তে থাকে।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের ২০১৮ সালের এক জরিপ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রতি হাজারে স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন ১১ দশমিক ৩৯ জন মানুষ। প্রায় ২০ লাখ স্ট্রোকের রোগী রয়েছে বাংলাদেশে। স্ট্রোকের ঝুঁকি ৬০ বছরের বেশি মানুষের মধ্যে ৭ গুণ বেশি। নারীর চেয়ে পুরুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ। স্ট্রোকের প্রকোপ শহরের চেয়ে গ্রামে কিছুটা বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বব্যাপী যত অসংক্রামক ব্যাধি আছে, সেগুলোর মধ্যে মৃত্যুর দিক থেকে হৃদরোগের পরেই স্ট্রোকের অবস্থান এবং শারীরিক অক্ষমতার জন্য স্ট্রোক সবচেয়ে বেশি দায়ী। প্রতিবছর প্রায় দেড় কোটি মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। যাদের মধ্যে প্রায় অর্ধকোটি মৃত্যুবরণ করেন এবং প্রায় অর্ধকোটি মানুষ সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেন।

চিকিৎসকদের মতে, উন্নত বিশ্বের তুলনায় নিম্ন আয়ের দেশে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। এই ঝুঁকি নিয়মিত বেড়েই যাচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে এটা ৮০ শতাংশ বাড়তে পারে।

জানা গেছে, মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কোনো কারণে বিঘ্নিত হলে স্ট্রোক সংঘটিত হয়। বিশেষ করে রক্তনালী বন্ধ হয়ে কিংবা রক্তনালী ছিঁড়ে মস্তিষ্কে এই রক্ত সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। রক্তে থাকে অক্সিজেন আর পুষ্টিগুণ। ফলে অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের টিস্যুগুলো মারা যায়। স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় কারণ হলো উচ্চরক্তচাপ। সারা বিশ্বে মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ স্ট্রোক।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)