দুই দিনের মধ্যে সাগরে লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’য়ের শঙ্কা

নিউজ ডেস্ক:

আগামী দুই দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর। এটি ক্রমে শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এ পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

তবে আগামী সপ্তাহে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মোংলায় ২০, খুলনায় ২, ফেনীতে ৬, কুমিল্লায় ৭, রাঙ্গামাটিতে ১০, সীতাকুণ্ডে ১৩, সন্দ্বীপে ৭ ও চট্টগ্রামে ৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, আন্দামান সাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। আগামী তিনদিনে লঘুচাপটি ঘণীভূত হতে পারে।

বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস তুলে ধরে তিনি বলেন, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

এ সময়ে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।

বুধবার সকালে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পূর্বাভাস মডেলগুলোর প্রথম দিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে সেটি শক্তিশালী হওয়ার কথা থাকলেও এখন সেটি হচ্ছে না। এটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড় হিসেবে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। লঘুচাপটি শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘সিত্রাং’।

সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ ও শক্তির বিষয়ে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতীয় উপমহাদেশে জেট স্টিমের গতিপথ ও আবহাওয়ার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বিশেষ করে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উচ্চতায় বায়ুপ্রবাহের দিক ও মান, বায়ুচাপ, বায়ু শিয়ার, সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা, ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি ও শক্তিশালী হওয়ার জন্য ২৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পানির তাপমাত্রা, সমুদ্রে জমা হয়ে থাকা ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রয়োজনীয় তাপীয় শক্তির বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে, সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এর কেন্দ্রের বেশি অংশ বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে ও অপেক্ষাকৃত কম অংশ পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে স্থলে ভাগে প্রবেশের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, উপরোক্ত তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হনার সময় বায়ুর গতিবেগ উঠতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার। সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির স্থল ভাগে আঘাতের স্থান যদি কিছুটা পূর্বদিকে সরে গিয়ে পুরোপুরি বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশ করে তবে ঘূর্ণিঝড়টির সর্বোচ্চ গতিবেগ দমকা হাওয়াসহ ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। কারণ বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলের পানির তাপমাত্রা ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা অপেক্ষা বেশি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)