‘এবার কেউ বেইমানি করলে প্রতিহত করার ঘোষণা’

অনলাইন ডেস্ক :

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে কিংবা অভিপ্রায় ব্যক্ত করবেন তাদেরকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা পর্যায়ের নেতারা। তারা বলেছেন, ‘নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তই সঠিক। তৃণমূলের ধারাবাহিক কর্মসূচিতে নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এই বার্তা পেয়েছি, কেউই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় না। বিএনপির তৃণমূল কখনো বেইমানি করেননি। কেন্দ্রীয় কিছু নেতা লোভে পড়ে বিগত দিনে দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, ভুল সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছেন। কিন্তু এবার যদি একইরকমভাবে কেউ ভুল করার সাহস দেখান তাহলে তাকে অপমানের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে আরও ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিন বিভাগের সব জেলা ও মহানগর পর্যায়ের সভাপতি/আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক/ সদস্য সচিব উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, সভায় জেলা ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা বলেন, ওয়ান ইলেভেনে দলের বেইমানরা সক্রিয় না হলে আজকের পরিস্থিতি তৈরি হতো না। ২০১৪ সালের নির্বাচন ঠেকাও আন্দোলন যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে তখন দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু বিশ্বাসঘাতকের প্ররোচনায় বিএনপির হাইকমান্ড আন্দোলন থামিয়ে দেন। ২০১৮ সালেও নির্বাচনেও দলের মধ্যে কিছু লোভী ছিল। যারা ক্ষমতাসীন দলকে বিশ্বাস করে শুধু নিজেদের আসন নিশ্চিত করে পুরো দলকে নির্বাচনে নিয়েছিল। নির্বাচনে তারা নিজেরা ডুবেছে, দলকেও ডুবিয়েছে।

এক পর্যায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেন, এবারও যদি দলের ভেতরে দালাল থাকে, তাহলে কী হবে? তখন উপস্থিত নেতারা বলেন, এবার যদি আর কোনো বেইমান বা দালালের আবির্ভাব ঘটে তাহলে তার বিচার দলের হাইকমান্ড নয়, তৃণমূল নেতাকর্মীরা যেখানে পাবে সেখানে করবে। নেতারা আরও বলেন, সারাদেশে নেতাকর্মীদের এবার বাঁচা-মরার লড়াই। হয় জিততে হবে, নয় মরতে হবে। এই মন্ত্র নিয়ে সবাইকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এ আন্দোলন সফল করতে কেন্দ্রের নেতাদেরকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর থেকে বেরিয়ে মাঠে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নেতারা।

এছাড়াও সব ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক শক্তিতে আন্দোলন করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির হাইকমান্ড বিভাগীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেন, এই মুহূর্তে কার পদ আছে, কার পদ নেই, কে উপরে, কে নিচে কিংবা কে মূল্যায়িত হন নাই সেসব নিয়ে কোন্দল করা যাবে না। আগে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।

সভায় ১০ বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে বেশ কিছু নির্দেশনা দেন দলের হাইকমান্ড। এর মধ্যে প্রত্যেক থানা, উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে পথসভা, কর্মিসভা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন দলের শীর্ষ নেতারা।

গত বুধবার ১০ সাংগঠনিক বিভাগে সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। আগামী ১২ অক্টোবর থেকে এই সমাবেশ শুরু হবে। শুরুর দিন চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ, ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুর, ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী এবং সবশেষে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় হবে সমাবেশ। সভায় সাংগঠনিক বিভাগে ঘোষিত সমাবেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি চায় বিএনপি হাইকমান্ড। এজন্য নানা দিকনির্দেশনা দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে জেলা ও মহানগরে কোনো কোন্দল থাকলে তা সমাধানের ওপর জোর দেন হাইকমান্ড। সমাবেশে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেওয়ার বিষয়ে যা যা করার দরকার, তা করতে নেতাদের নির্দেশও দেন দলটির হাইকমান্ড।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)