গাবুরায় বেড়ীবাঁধ সংস্কারের নামে নদী থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগ 

আশিকুজ্জামান লিমন, শ্যামনগর:
শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা থেকে বেড়ীবাঁধ সংস্কারের নামে নদী থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে৷
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার গাবুরা
ইউনিয়নের জেলেখালী এলাকায় ভাঙ্গন কবল থেকে পাতাখালী গ্রামের নুরউল্ল্যাহ নামীয় একজনের মাধ্যমে কপোতাক্ষ নদী থেকে কার্গো ড্রেজিং মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে চর ভরাটি কার্য্যক্রম অব্যহত রেখেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ৷
যদিও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান পুলিশ দিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন তারপরও তাদের কাজ বন্ধ নেই ৷ প্রত্যান্ত অঞ্চলের কারনে প্রশাসনের অবর্তমানে এই কাজ দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে ৷
গত ২৪ মে ২০১৭ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিশাখা-২ প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করেন,  প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিবেশগত মান উন্নয়ন এবং পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রশমন এবং টেকসই পরিবেশ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (১৯৯৫ সনের ১ নম্বর আইন) এর ৫ নম্বর ধারার উপধারা (১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ১৯৯৯ সালে সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্টের চতুর্দিকে ১০ কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকাকে সরকার কর্তৃক প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (Ecologically Critical Area), ECA অর্থাৎ ইসিএ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেন।
পরবর্তীকালে ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি, সুন্দরবন প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার মৌজাসমূহের নাম সন্নিবেশ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় ৷
এ প্রজ্ঞাপনটি ১৩ জানুয়ারি ২০১৫ সালে ২২.০০.০০০০.০৭৩.১৩.০০৪.২০১৪/১৩ সংখ্যক স্মারকে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনের স্থলাভিষিক্ত হয়। সুন্দরবন প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকার সকল পূর্ণ ও আংশিক মৌজার নাম এ সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে সন্নিবেশ করা হয়। সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্টের চতুর্দিকে ১০ কিলোমিটার বিস্তৃত ইসিএভুক্ত এলাকা হিসাবে শ্যামনগরের ৫২টি গ্রাম (Ecologically Critical Area) ECA অর্থাৎ ইসিএ এলাকা হিসেবে দেখানো হয়েছে। তার মধ্যে গাবুরা উল্লেখযোগ্য ৷
তবে প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা থেকে বালু উত্তলনের ঘটনায় জুয়েল নামের একজন সহযোগী বলেন, বরগুনার মিয়র ঠিকাদার শাহাদাৎ হোসেন ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে বলে বালু উত্তোলনের করছেন ৷ আমরা কিছু জানি না, আপনি স্যারের সাথে কথা বলেন ৷
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার জুয়েল বলেন, ২০১৯ সালের মেঘা প্রকল্পের আওতায় টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মানে ৯ জন ঠিকাদার বেড়িবাঁধের ব্লকের কাজ গ্রহণ করি ৷ আমাদের ২ কিলোমিটার কাজ শুরু করেছি ৷ ব্লকের কাজের জন্য নদীর চর ভরাট করা হচ্ছে ৷ তার জন্যই এই বালু উত্তোলন ৷
তবে স্থানীয় রফিকুল, হজরত, আরিফ, শুকর আলী, মনিরুল জানিয়েছেন, অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনে পরিবেশগত সংকটাপন্ন ৷ বালু উত্তোলনে টেকসই বেড়িবাঁধ তৈরি করতে বেড়িবাঁধের ক্ষতির সংখ্যা বেশি ৷ কারন, নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হলে বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন সৃষ্টি হবে ৷  নিচে ফাঁকা থাকলে বেড়িবাঁধ থাকবে কি করে?
গাবুরা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি ৷
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান বলেন, আমি পুলিশ পাঠিয়ে কাজটি বন্ধ করেছিলাম কিন্তু পূনরায় যদি কাজ করে থাকে তবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ৷
স্থানীয় সচেতন মহল জানান, ভাঙ্গা গড়ার খেলায় মেতেছে সুবিধাবাদীরা ৷ এদের কোনমতেই থামানো যাবে না ৷
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)