বিশ্ব রোগী সুরক্ষা দিবস আজ

অনলাইন ডেস্ক :

দেশে ভুল চিকিৎসা, অনিরাপদ ওষুধ প্রয়োগ এবং ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ডোজ শেষ না করার মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব কারণে প্রতিবছর অসংখ্য রোগী মারা যাচ্ছে। ফলে রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সঠিক পরিচর্যা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে এখনই গুরুত্ব দিতে হবে।

১৪ আগস্ট রাজধানীর ফুলবাড়িয়ার সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ডোজ টিকা নিতে যান সিদ্ধেশরী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান। সেখানে এক কর্মী ভুল করে তাকে একসঙ্গে দুই ডোজ টিকা প্রয়োগ করেন। তিনি জানান, প্রথমবার সঠিকভাবে দেওয়া হয়নি, তাই দ্বিতীয়বার দিয়েছে। এদিকে জাহিদের টিকা নেওয়ার স্থান ফুলে যায় এবং তীব্র ব্যথা হতে থাকে। একপর্যায়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঢাকা মেডিকেলে গেলে চিকিৎসকরা ক্ষতস্থানে অস্ত্রোপচার করেন।

মে মাসে নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা নিতু আক্তার (৩৬) স্তন ক্যানসারের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসক দেখালে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় টিউমার ধরা পড়ে। রাজধানীর ল্যাবএইড ক্যানসার হসপিটাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আলী নাফিসা অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। ২৬ মে অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচার হলেও টিউমার থেকে যায় ঠিক আগের জায়গাতেই।

ভুক্তভোগী রোগী যুগান্তরকে জানান, অপারেশনের এক সপ্তাহ পার না হতেই প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। এমতাবস্থায় ১৪ আগস্ট নিজ জেলার ল্যাবএইড শাখায় সোনোগ্রাফি (ইউএসজি) করালে রিপোর্টে দেখা যায়, অপারেশন হলেও টিউমার আগের জায়গাতেই রয়ে গেছে। উল্টো সেখানে কাটা-ছেঁড়ার কারণে ইনফেকশন হয়ে ব্যথা বেড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বছর ওষুধ-সম্পর্কিত ক্ষতি সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বাড়াতে জোর দিয়েছে। ওষুধের নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য জরুরি পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছে। ওষুধের নিরাপদ ব্যবহারে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার জন্য রোগী এবং পরিবারকে ক্ষমতায়ন করার কথা বলছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিবছর নিু ও মধ্য-আয়ের দেশের হাসপাতালগুলোতে রোগীদের অনিরাপদ যত্নের কারণে ১৩৪ মিলিয়ন প্রতিকূল ঘটনা ঘটে, যার জেরে বার্ষিক ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব যুগান্তরকে বলেন, স্বাস্থ্যনীতির প্রথম শর্তই হচ্ছে কারও কোনো ক্ষতি না করা। রোগীর নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত নীতিগুলোর মধ্যে রয়েছে চিকিৎসার সময় যেকোনো রকমের ক্ষতি থেকে তাদের রক্ষা করা।

ইমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশন লেখার সময় সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করবেন না। এমনভাবে লিখতে হবে, যাতে রোগীর বুঝতে সহজ হয়। স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং টিম বিল্ডিং কার্যক্রমগুলো ত্রুটি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)