সাতক্ষীরায় চা বিক্রেতার গলাকেটে হত্যার ঘটনায় জড়িত মূলহোতা জাকির হোসেন গ্রেপ্তার,মাথা উদ্ধার
আসাদুজ্জামান:
সাতক্ষীরার চা বিক্রেতা ইয়াসিনকে গলাকেটে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যার ঘটনার চারদিন পর এ ঘটনায় জড়িত মূলহোতা জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৬ এর একটি আভিযানিক দল রোববার ভোরে সদর উপজেলার আলীপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তার দেয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক সকালে শহরের বাইপাস সড়কের একটি ব্রিজের নিচ থেকে নিহতের বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করে।
আসামী:জাকির হোসেন
সকাল ১০ টায় শহরের অদূরে মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন বাইপাস সড়কে এক প্রেস বিফিং-এ তথ্য জানান, র্যাব-৬ এর খুলনার অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ মোস্তাক মোর্শেদ।
গ্রেপ্তারকৃত মূল হোতা জাকির হোসেন (৪৫) খুলনা শহরের বাচ্চু শেখের ছেলে। সে সাতক্ষীরা শহরের গড়েরকান্দা এলাকার বিয়ে করে দীর্ঘদিন ধরে সেখানেই বসবাস করে আসছিল।
প্রেস বিফিং-এ র্যাব-৬ এর অধিনায়ক আরো জানান, খুনি জাকির হোসেন ও নিহত চা বিক্রেতা ইয়াসিন আলী এক সাথে ব্যবসা করতেন। আর এই ব্যবসার সুবাদে জাকির হোসেন নিহত ইয়াসিনের কাছে ২০ হাজার টাকা পাওনা ছিল। কয়েকবার সময় দেয়া শর্তেও ইয়াসিন তার ওই টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। একপর্যায়ে জাকির তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য গত ৩০ আগস্ট (মঙ্গলবার) তাকে বাইপাস সড়ক এলাকায় রাতে একটি ঘর নির্মাণের কাজের প্রস্তাব দেয়। এই প্রস্তাবে রাজী হয়ে ইয়াসিন ওই দিন রাত ১০ টার দিকে জাকির হোসেনের ভ্যানযোগে বাইপাস সড়কে যায়। বাইপাসসড়কের বকচরা এলাকা গিয়ে খুনি জাকির হোসেন রাত গভীর হওয়্রা জন্য তার সাথে গল্প করে সময় ক্ষেপন করে। এরপর সুযোগ বুঝে রাত ১১ টা ৫৮ মিনিটে ইয়াসিনকে ভ্যান চালাতে বলে জাকির পিছনে বসে তার গর্দানে দা দিয়ে কোপ মারে। এক পর্যায়ে ইয়াসিন যখন সড়কের উপর পড়ে যায় তখন জাকির দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তার মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরে ঘাতক জাকির মাথাবিহীন শরীরটা বাইপাস সড়কের পাসে একটি ক্যানেলে ফেলে দেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি ব্রিজের তলায় ডোবার মধ্যে তার মাথাটি বস্তাবন্দী করে ফেলে দেয়। পরদিন ৩১ আগষ্ট সকালে স্থানীয়রা বাইপাস সড়কের পাশে ক্যানেলে মাথাবিহীন মরদেহটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করার পর সকাল ১০ টার দিকে নিহতের স্ত্রী তাসলিমা মরদেহটি তার স্বামীর বলে দাবী করেন।
এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারের পর জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়। লোমহর্ষক এই হত্যাকান্ডের পর জড়িতদের গ্রেপ্তারে র্যাব-৬ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে। একপর্যায়ে রোববার ভোরে সদর উপজেলার আলীপুর এলাকা থেকে এ ঘটনার মূল হোতা খুনি জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।