নির্বাচনে জালিয়াতির মামলায় সু চির ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গৃহবন্দি থাকা মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দেশটির একটি আদালত নির্বাচনে জালিয়াতির মামলায় সু চিকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং এই কারাদণ্ড দেয়।

গণতন্ত্রপন্থি এই নেত্রীর কারাদণ্ডের রায়ের ব্যাপারে জানেন এমন একটি সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেতা অং সান সু চি শুক্রবার নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং বিচারক তাকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।

শান্তিতে নোবেলজয়ী ৭৬ বছর বয়সী অং সান সু চির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় এক ডজনের বেশি মামলা দায়ের করেছে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী দেশটির জান্তা সরকার। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। রাজধানী নেইপিদোর জান্তানিয়ন্ত্রিত আদালতেই সেসব মামলার বিচার চলছে।

রয়টার্স বলছে, এখন পর্যন্ত রায় ঘোষণা করা বিভিন্ন মামলায় অং সান সু চিকে ১৭ বছরেরও বেশি করাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। সু চি অবশ্য বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে মিথ্যা বলে দাবি করে এসেছেন।

২০২০ সালের নভেম্বর মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। তবে ওই নির্বাচনে সু চি কারচুপি করেছেন বলে শুক্রবার রায় দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।

রয়টার্স বলছে, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় মিয়ানমারের ওই সূত্রটি পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, সশ্রম কারাদণ্ড বা রায়ে ‘কঠোর পরিশ্রমের’ বিষয়ে যে কথা বলা হয়েছে তার অর্থ ঠিক কী তা স্পষ্ট নয়। সু চির পাশাপাশি মিয়ানমারের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং সহ-আসামি উইন মিন্টকেও একই সাজা দিয়েছেন আদালত।

অবশ্য ক্ষমতাসীন সামরিক পরিষদের একজন মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। জান্তা বলছে, সু চিকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। বন্দি করা হয় গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের হওয়া সবগুলো মামলায় যদি সু চি দোষী সাব্যস্ত হন, সেক্ষেত্রে সবমিলিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রায় ১৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হতে পারে। রাজধানী নেইপিদোর আবদ্ধ আদালতে সু চির বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)