পুরুষের প্রজনন ও যৌন কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে কুমড়ার বীজ

নানান রকমের পুষ্টিগুণ থাকায় কুমড়ার বীজ ‘সুপার ফুড’ হিসেবে বিবেচিত। কুমড়ার বীজ মূল্যবান পুষ্টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর যা আমাদেরকে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, আঁশ, স্বাস্থ্যকর চর্বির যোগান দেয়। বিভিন্ন রোগের প্রাকৃতিক দাওয়াই হলো এই বীজ।

বিশেষ করে পুরুষের সুস্বাস্থ্যের দিকে বেশি নজর রাখে কুমড়ার বীজ। পুরুষের প্রোস্টেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এমনকি উর্বরতাও বাড়ায় এই জাদুকরী বীজ। এছাড়া এই বীজ উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিনের দুর্দান্ত এক উৎস।

প্রোস্টেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
ইন্ডিয়ান জার্নাল অব ইউরোলজিতে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, কুমড়ার বীজ খাওয়া প্রোস্টেট স্বাস্থ্যকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে, যা পুরুষের যৌন স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি সাধারণত প্রোস্টেট গ্রন্থি শক্তিশালী করতে ও পুরুষদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর হরমোন ফাংশন উন্নীত করতে সাহায্য হয়। কুমড়ার বীজ খেলে সৌম্য প্রোস্ট্যাটিক হাইপারপ্লাসিয়া (বিপিএইচ) এর সমস্যা কমে। যা একটি বর্ধিত প্রোস্টেট গ্রন্থির কারণে প্রস্রাবের সমস্যার সৃষ্টি করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কুমড়ার বীজ খেলে বিপিএইচ সম্পর্কিত উপসর্গগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে।

পুরুষের উর্বরতা বাড়ায়
কুমড়ার বীজে থাকা জিঙ্ক থেকে পুরুষরা উপকৃত হন। শুক্রাণুর গুণমান কমে যাওয়া এমনকি পুরুষদের মধ্যে বন্ধ্যাত্ব কম জিঙ্কের মাত্রার কারণে হতে পারে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই বীজ অন্তর্ভুক্ত করলে সামগ্রিক শুক্রাণুর গুণমান উন্নত হতে পারে। ডিকে পাবলিশিং-এর ‘হিলিং ফুডস’ বই অনুসারে, কুমড়ার বীজ পুরুষদের উর্বরতা বাড়াতে সাহায্য করে। আবার এই বীজে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পুরুষের স্বাস্থ্যকর টেস্টোস্টেরনের মাত্রায়ও ভূমিকা পালন করতে পারে।

উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিনের চাহিদা পূরণে
কুমড়ার বীজে পাওয়া যায় উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিন। যা পেশি তৈরি ও মেরামতের জন্য অপরিহার্য। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) নিউট্রিশন চার্ট অনুযায়ী, ১০০ গ্রাম কুমড়ার বীজে প্রায় ২৩.৩৩ গ্রাম প্রোটিন থাকে। সহজ প্রোটিন বুস্ট পেতে খাবারে বা নাস্তায় কুমড়ার বীজ যোগ করুন।

ওজন কমায়
কুমড়ার বীজে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। ২৬ হাজার মার্কিনদের উপর করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত বাদাম ও বীজ খান তারা কম স্থূল ছিলেন, নোট মাইকেল টি. মারে ও জোসেফ পিজোর্নোর বই ‘দ্য এনসাইক্লোপিডিয়া অফ হিলিং ফুডস’।

>>> কুমড়ার বীজ জিঙ্কসমৃদ্ধ হওয়াই এটি কোষের পুনর্নবীকরণ, ক্ষতি মেরামত ও চুলের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।

>>> এই বীজ ফসফরাসের শীর্ষ উত্সগুলোর মধ্যে একটি, যা আপনার বিপাককে উন্নত করে।

>>> কুমড়ার বীজে থাকা ম্যাগনেসিয়াম হৃৎপিণ্ডের পাম্পিং, রক্ত সঞ্চালন বাড়ানো ও বিরামহীন অন্ত্রের কার্যকারিতার মতো গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় কাজগুলো আরো বাড়ায়।

>>> এই বীজে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে, যা প্রদাহনাশক হিসেবে কাজ করে।

>>> এছাড়া এতে আছে ট্রিপটোফেন নামক উপাদান, যার ফলে ভালো ঘুম হয় ও বিষণ্নতা কমে।

পুরুষরা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কুমড়োর বীজ অন্তর্ভুক্ত করলে বিভিন্নভাবে লাভবান হবেন। তবে কারও যদি কঠিন কোনো রোগ থাকে তাহলে অবশ্যই খাদ্যতালিকায় কুমড়ার বীজ যোগ করার আগে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ নিতে হবে।

সূত্র: এনডিটিভি

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)