জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক:
জাতীয় দলের সিনিয়র পাঁচজন ক্রিকেটারদের একজনও খেলছেন না, এমন দৃশ্য তাদের অভিষেকের পর এবারই প্রথম দেখবেন দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। যার কারণ, তারুণ্যে ভরপুর নতুন এক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা শুরু হচ্ছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে।
সিনিয়রদের ছাড়া দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ কতটা নিরাপদ, সেটা প্রমাণ করার জন্যই যেন নামবে বাংলাদেশ দল। আজ (শনিবার) তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-২০তে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে নামছে নতুন চেহারার এক বাংলাদেশ।
হারারে স্পোর্টস ক্লাবে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায়। টি স্পোর্টস চ্যানেলে খেলা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় পর টি-২০ ফরম্যাটে দেশের সেরা পাঁচ ক্রিকেটার- মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে ছাড়া সাজানো হয়েছে বাংলাদেশ দল।
২০০৬ সালে ক্রিকেটের ছোট ফরম্যাটে অভিষেকের পর থেকে এ পর্যন্ত ১২৮টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৬ ম্যাচ খেলে পাঁচটিতে হেরেছে টাইগাররা।
২০১৭ সালে টি-২০ ফরম্যাট থেকে অবসর নেন মাশরাফী। আর এই সিরিজের আগ মুহূর্তে টি-২০ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেন তামিম। আগে থেকেই এই সিরিজ না খেলার সিদ্বান্ত নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এছাড়া মুশফিকুর রহিম এবং নিয়মিত টি-২০ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে।
নুুরুল হাসান সোহানকে অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। টি-২০ ফরম্যাটে এ পর্যন্ত ৪৪টি ম্যাচে জয় এবং ৮১টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। বাকি তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বে শেষ ১৩ ম্যাচে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে সব ফরম্যাটেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে এখনো টি-২০ ক্রিকেট এমন একটি ফরম্যাট যেখানে বাংলাদেশকে সমস্যায় ফেলতে পারে জিম্বাবুয়ে।
ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা থাকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টি-২০ সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী থাকবে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ দলের পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘অনেকে এই ফরম্যাটে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা বলছেন, কিন্তু আমরা কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে যাচ্ছি না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এখনো এই ফরম্যাটে নিজেদের প্রমাণ করতে পারিনি। এটা মূলত রিয়াদ-মুশফিকুরকে দল থেকে বাদ দেয়া বা সাকিবকে বাদ দেয়া নয়। আমি মনে করি কিছু খেলোয়াড়কে পরখ করে দেখতে চাই আমরা।’
সুজন যোগ করেন, ‘আমরা এমন একটি দলের বিপক্ষে খেলতে চাই, যা কিছুটা সহজ। আমরা সেসব নতুন খেলোয়াদের সম্পর্কে ভালো কিছু ধারণা পেতে চাই। সিনিয়র খেলোয়াড়দের সামর্থ্য সর্ম্পকে আমরা আগের থেকেই জানতাম।’
বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এ বছরের আইসিসি পুরুষ টি-২০ বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয়ায় আত্মবিশ্বাসী জিম্বাবুয়ে। তবে ইনজুরির কারণে দুই পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি এবং টেন্ডাই চাতারাকে পাচ্ছে না তারা।
বাছাইপর্বে দলের সাফল্যে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন এই দুজন। জিম্বাবুয়ের কন্ডিশন পেসারদের জন্য সহায়ক। তাই মুজারাবানি ও চাতারার অনুপস্থিতি বাংলাদেশ দলের জন্য স্বস্তির।
দল হিসেবে জিম্বাবুয়ে যেমনই হোক না কেন এই সিরিজের সব ম্যাচে জয়ের দিকেই চোখ বাংলাদেশ অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি জিম্বাবুয়েকে তাদের মাটিতে হারাতে আমাদের সেরা খেলা খেলতে হবে। এটা চ্যালেঞ্জিং।’
সোহান আরো বলেন, ‘অবশ্যই আমরা যতটা সম্ভব ম্যাচ জিততে চাই। সবগুলো ম্যাচ জিতলে ভালো হবে। তাই আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ নিয়ে এগোবো। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সিরিজের শুরুটা ভালো করা।’
বাংলাদেশ দল: নুরুল হাসান সোহান (অধিনায়ক), মুনিম শাহরিয়ার, এনামুল হক বিজয়, লিটন দাস, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শেখ মাহেদি, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ ও পারভেজ হোসেন ইমন।
জিম্বাবুয়ে দল: ক্রেইগ আরভিন (অধিনায়ক), রায়ান বার্ল, রেগিস চাকাভা (উইকেটরক্ষক), তানাকা চিভাঙ্গা, লুক জঙ্গি, ইনোসেন্ট কাইয়া, ওয়েসলে মাধভেরে, তাদিওয়ানশে মারুমানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, টনি মুনিয়োঙ্গা, রিচার্ড এনগারাভা, ভিক্টর নিয়ুচি, সিকান্দার রাজা, মিল্টন শুম্বা ও সিন উইলিয়ামস।