শ্যামনগরে জোড়া খুন মামলার ৪ আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব

আশিকুজ্জামান লিমনঃ
শ্যামনগরের টেংরাখালী গ্রামে চাঞ্চল্যকর জোড়া খুন মামলার চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত শনিবার (৯ জুলাই) রাত সাড়ে দশটার সময় খুলনা মেডিকেল কলেজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেন ৷ আটক তিন আসামিরা হচ্ছে, হত্যার ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত লাল্টু বাহিনীর অন্যতম সদস্য মোঃ নাসরি উদ্দীন কয়াল(৩২), মোঃ আলাউদ্দীন গাজী(২৯), মোঃ সাদেক আলী গাজী(৩৯) ও আলমগীর হোসেন মালী(২২)। র‌্যাব জানায়, গত ৮ জুলাই বিকালে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার টেংরাখালী গ্রামে ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের সাথে শ্যামনগর থানার রমজাননগর ইউপি আওয়ামী লীগের নেতাদের মিটিং চলাকালীন সময়ে এলাকায় দাঙ্গা, হামলার মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টিকারী লাল্টু বাহিনীর প্রধান ও সুন্দরবনের বনদস্যু আব্দুল হামিদ লাল্টু এবং তার প্রধান সহযোগী আজগার আলী বুলু দ্বয়ের নেতৃত্বে ১১০-১২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল রামদা, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রড, গাছি দা, লাঠি, হকিস্টিক, জিআই পাইপ ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়৷ এ সময়ে হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে থাকা আসবাবপত্র, অফিসের সামনে থাকা মোটরসাইকেল ও কার্যালয়ের ভিতর থাকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে নষ্ট করে৷ এ সময় মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা ব্যক্তিবর্গ তাদের এই কর্মকান্ডে বাধা দিলে আসামিরা তাদেরকে আঘাত করে গুরুতর জখম করে ৷ আসামিরা ভাংচুর করে ও ভিকটিমদের জখম করে চলে যায় ৷ এ সময়ে স্থানীয় লোকজন গুরুতর জখম অবস্থায় ১৮-২০ জনকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত আমির হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন৷ গুরুতর আহত কাদের শেখও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স যোগে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন ৷
এই বিষয়ে ভিকটিম মোঃ আব্দুল বারী বাদী হয়ে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানায় ৭৩ জন এজাহার নামীয় আসামিসহ ৪০/৫০ জন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ৷ ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারের পর জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে ৷ সংগঠিত হত্যার ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে র‍্যাব-৬ এর একটি অভিযানিক দল গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে অভিযান অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার র‌্যাব-৬ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে আসামিরা খুলনার সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আভিযানিক দলটি একুই তারিখ রাতে কেএমপি খুলনার সোনাডাঙ্গা থানাধীন খুলনা মেডিকেল কলেজ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)