পরবর্তী শ্রীলঙ্কা হতে যাচ্ছে পাকিস্তান: ইমরান খান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে দেশটি পরবর্তী শ্রীলঙ্কা হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। রোববার ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সারাদেশের দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভাষণে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি।

এ সময় পাকিস্তানের জনগণকে ‘নিজের ভালোর জন্য’ মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান ইমরান খান। একই সঙ্গে দেশটির ‘আমদানি করা সরকারের’ বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন তিনি।

ইমরান খানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশটির বিভিন্ন শহরে পিটিআইয়ের কর্মী এবং সমর্থকরা রাস্তায় নেমে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন। সাবেক এই পাক প্রধানমন্ত্রীর অনলাইন ভাষণের জন্য রোববার রাত ১০টার পরপরই দেশটির বিভিন্ন স্থানে স্ক্রিন বসানো হয়।

তিনি বলেন, পিটিআই শুধু নির্বাচন নয়, বরং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। পিটিআই সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দেশের অর্থনীতিকে ব্যাহত করেছে।

ইমরান খান বলেন, ‘আমি মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানাতে আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ এটি আপনার নিজের সমস্যা। বেতনভোগী, কৃষক ও শ্রমিকসহ দরিদ্র শ্রেণির মানুষ মুদ্রাস্ফীতির কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমি অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের তারিখ না পাওয়া পর্যন্ত আবারও প্রতিবাদের ডাক দেব। আমাদের এই প্রতিবাদ চলবে। আমরা শুধু নির্বাচন চাই না। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।’

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দাবি করেছে যে, ইমরান খান স্থলমাইন বসিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা হল পিটিআই সরকার পেট্রল এবং ডিজেলের দাম মাত্র কয়েক রুপি বাড়িয়েছিল। অন্যদিকে, বর্তমান শাসকরা ১০০ রুপির বেশি বাড়িয়েছে।

সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কর্মসূচির কারণে হয়েছে বলে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার যে দাবি করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করে ইমরান খান বলেছেন, বর্তমান সরকার গত দুই সপ্তাহ ধরে আইএমএফ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করলেও পিটিআই নেতৃত্বাধীন সরকার গত আড়াই বছর ধরে এই কর্মসূচির সাথে জড়িত ছিল।

তিনি বলেন, দাম বৃদ্ধির জন্য আমরা আইএমএফের নির্দেশনা পেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা এর পরিবর্তে পেট্রলের দাম ১০ রুপি কমিয়েছি।

সাবেক এই পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আন্তর্জাতিক রেটিংয়ের কারণে দেশের অর্থনীতির অবস্থা ছিল অস্বাভাবিক। এর পাশাপাশি দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর মান অবনমন করা হয়েছিল; যার ফলে বাঁধের জন্য ঋণ পেতেও অক্ষম হয় পাকিস্তান।

অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল ইসলামাবাদে অবস্থানরত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে ‘ত্রাণ’ চেয়েছিলেন বলেও দাবি করেন ইমরান খান। পিটিআইয়ের এই চেয়ারম্যান বলেন, আমরা রেমিটেন্স ৩১ বিলিয়নে এবং রপ্তানি ৩২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছিলাম। কিন্তু তখন মীরজাফর ও মীর সাদিক ষড়যন্ত্র করেন, যা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত করেছে।

ইসলামাবাদ, করাচি, লাহোর, পেশওয়ার, কুয়েটা, ফয়সালাবাদ, রাওয়ালপিণ্ডি এবং মুলতানসহ পাকিস্তানের প্রধান প্রধান সব শহরে বিক্ষোভ করেছে পিটিআই। এছাড়াও দেশের অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ করেছেন পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকরা।

গত বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় রোববার দেশজুড়ে ‘আমদানি করা’ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ পালনে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন পিটিআইয়ের প্রধান ইমরান খান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)