সাতক্ষীরায় সুনামের সঙ্গে ৫৫ বছর ধরে ঘোল বিক্রি করছেন নিতাই
নিউজ ডেস্ক:
৫৫ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে পারিবারিক ঐতিহ্য ঘোলের ব্যবসা ধরে রেখেছেন নিতাই চন্দ্র ঘোষ। সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড়বাজারে ঘোল ব্যবসায়ী তিনি। এই বাজারেই পাওয়া যায় সুস্বাদু ঘোল। ঘোলের সঙ্গে টক দই, ভেজালমুক্ত ঘিও বিক্রি করেন।
নিতাই চন্দ্র ঘোষ শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার ঘোষপাড়ার মৃত সতুশ চন্দ্র ঘোষের ছেলে। ঘোষপাড়ার তিন ব্যবসায়ী নিতাই চন্দ্র ঘোষ, দিপংকর ঘোষ ও সঞ্জয় ঘোষ ঘোল, টক দই ও ঘি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনজনই একসঙ্গে ব্যবসা করছেন সুলতানপুর বড়বাজারে। প্রতিদিন ৩০ কেজি ঘোল, ৩০ টক দই ও ৩০ কেজি খাঁটি ঘি নিয়ে পৃথক পৃথকভাবে বসেন তারা।
নিতাই চন্দ্র ঘোষ বলেন, আমি এখানে ৫৫ বছর ধরে ঘোল, টক দই ও ঘি বিক্রি করি। প্রত্যেকটা জিনিসই ভেজালমুক্ত খাঁটি দুধ থেকে তৈরি। টক দই প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা, ঘোল প্রতি কেজি ৫০ টাকা ও ঘি প্রতি কেজি ৯০০ টাকা দরে। এক গ্লাস ঘোল বিক্রি হয় ১০ টাকায়। প্রতিদিন ৭০০-৮০০ টাকার ঘোল, টক দই, ঘি ৩-৪ কেজি বিক্রি হয়। দৈনিক গড়ে ৪-৫ হাজার টাকার বেচাকেনা হয় দোকানে। এতেই চলে যায় সংসার।
অন্যদিকে দিপংকর ঘোষের বাবা কাত্তিক ঘোষ এই ব্যবসা করতেন। বাবার ব্যবসাটি এখন ধরে রেখেছেন দিপংকর ঘোষ। তিনি জানান, আমরা তিনজন একসঙ্গে ব্যবসা করি। আমাদের এখানে পণ্যে কোনো ভেজাল নেই। সবগুলো খাঁটি দুধ দিয়ে তৈরি। বাড়ি থেকে তৈরি করে বাজারে এনে বিক্রি করি।
আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা বাজারের সবজি দোকানি অলিউর রহমান সপ্তাহে ৪-৫ দিন বড়বাজারে আসেন মালপত্র কেনার কাজে। বড়বাজারে এলেই দোকান থেকে ঘোল খান তিনি। অলিউর রহমান বলেন, বাজারে এলেই আমি এখান থেকে ঘোল খায়। মাঝেমধ্যে খাঁটি দুধের ঘি-টক দই বাড়িতে নিয়ে যায়। এদের খাবারের মান ভালো। আশপাশের সব ক্রেতাই এখানকার ঘোল, টক দই ও ঘির প্রশংসা করেন।
ক্রেতাদের বিষয়ে নিতাই চন্দ্র ঘোষ বলেন, একবার কেউ কিনলে পরবর্তীতে আবার দোকানে আসেন। সেই হিসেবে অনেক রিপিট ক্রেতা আছে। তাদের প্রয়োজন হলেই দোকানে হাজির হন। খাঁটি ঘি, দই ও ঘোল ভেজালমুক্ত হওয়ায় সুনামটা আমরা ধরে রেখেছি।
সাতক্ষীরা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. মোকলেছুর রহমান বলেন, সুলতানপুর বাজারে তিনজন ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা শুধুমাত্র টক দই, ঘোল ও ঘি বিক্রি করেন। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য সেখান থেকে ঘিয়ের নমুনা নিয়েছি। পরীক্ষার পর জানা যাবে তারা ভেজাল কিছুর ব্যবহার করেন কি না। তাছাড়া কখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। জেলায় বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে কমবেশি টক দধি ও ঘি বিক্রি করেন, তবে তারাই শুধু ঘোল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।