স্ত্রীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মেয়েকে ধর্ষণ, স্বামীকে ধরিয়ে দিলেন স্ত্রী

শ্যামনগর প্রতিনিধি :

 শ্যামনগরে নিয়মিত ওষুধের সাথে স্ত্রীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে নিজ মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে শেখ রবিউল ইসলাম খোকন (৪২) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

প্রায় তিন মাস ধরে একই কৌশলে প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো ঐ ব্যক্তিকে মঙ্গলবার (৩১ মে) রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ভুক্তভোগীর মায়ের নিকট থেকে ৯৯৯-এ কল পেয়ে শ্যামনগর থানা পুলিশ গাবুরা ইউনিয়নের চাঁদনীমুখা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম খোকন একই গ্রামের শেখ আব্দুল হকের ছেলে।

মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক মাস ধরে রবিউল ইসলাম খোকন তার তালাকপ্রাপ্ত মেয়ের উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। অসুস্থ স্ত্রীকে ওষুধের পাশাপাশি নিয়মিতভাবে রাতে একাধিক ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে রাখতেন তিনি। পরবর্তীতে স্ত্রী ঘুমিয়ে গেলে পাশের কক্ষে অবস্থানরত নিজ মেয়েকে লালসার শিকারে পরিণত করতে থাকেন রবিউল।

স্থানীয়রা আরও জানান, শুরুতে গলায় ছুরি ধরে জবাই করে হত্যার ভয় দেখিয়ে মেয়ের উপর পাশবিক নির্যাতন চালাতেন রবিউল। পরবর্তীতে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দেয়ায় পিতার লাম্পট্যের শিকারে পরিণত হয়েও বিষয়টি নিজ মায়ের কাছে গোপন করতে বাধ্য হয় তার নির্যাতিতা মেয়ে। এক পর্যায়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় মঙ্গলবার রাতে মেয়েকে নির্যাতনের সময় রবিউলকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, রবিউল দীর্ঘদিন নিজ মেয়েকে ধর্ষণ করে আসছিল। ভয়ে পরিবারের কাউকে কিছু বলতে না পেরে লম্বা সময় ধরে পিতার এমন কুৎসিত ব্যবহার সহ্য করে আসছিল মেয়েটি। মঙ্গলবার রাতে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় পুলিশ মেয়েটিকে নির্যাতনের অভিযোগে তার পিতাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী মেয়ে জানায়, স্বামীর বাড়ি থেকে পিত্রালয়ে ফেরার পর মায়ের অসুস্থতার সুযোগে ছুরির ভয় দেখিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। কারও কাছে মুখ খুললে মেরে ফেলার হুমকি দেয়ায় সে পিতার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস করেনি বলেও জানায়।

অভিযুক্তের স্ত্রী ময়না খাতুন জানার, তার অসুস্থতার সুযোগে অন্যান্য ওষুধের সাথে মিলিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রাতে তাকে ঘুমের ওষধ দিয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করে রাখা হতো। পরক্ষণে তার স্বামী পাশের কক্ষে থাকা স্বামী পরিত্যক্তা মেয়েকে ধর্ষণ করতো। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার নিজের সন্দেহের কথা জানানো সত্ত্বেও বার বার তা অস্বীকার করে আসছিল রবিউল শেখ। স্বামীকে ফেরাতে না পেরে বাধ্য হয়ে তিনি মঙ্গলবার রাতে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে বিষয়টি পুলিশে জানান।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ জানান, ধর্ষণের শিকার মেয়ের মায়ের দায়ের করা মামলায় রবিউল শেখকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীসহ রবিউল অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)