সিলেটে ডাইক ভেঙে বরাকের পানি সরাসরি ঢুকছে লোকালয়ে

নিউজ ডেস্ক:

সিলেটের জকিগঞ্জে সুরমা কুশিয়ারা নদীর উৎপত্তিস্থলে (বরাক-সুরমা-কুশিয়ারা নদীর মোহনা) ডাইক ভেঙে গেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ডাইক ভেঙে যায়। এতে উজানের বরাক নদী থেকে আসা পাহাড়ি ঢল সরাসরি ঢুকছে জকিগঞ্জের লোকালয়ে। সুরমা-কুশিয়ারা উৎপত্তিস্থলে ডাইক ভাঙায় মুহূর্তের মধ্যেই তলিয়ে গেছে বাড়িঘর-রাস্তাঘাট। নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে জকিগঞ্জের বিভিন্ন। এর ফলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, জকিগঞ্জের আমলশীদ নামক স্থান ভারত থেকে আসা বরাক নদী হতে সুরমা ও কুশিয়ার নদীর উৎপত্তিস্থল। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে সুরমা-কুশিয়ারার উৎপত্তিস্থলটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। স্থানীয়রা বস্তা দিয়ে ডাইকটি রক্ষা চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ডাইকটি ভেঙে গেছে। এর পর মুহূর্তেই জকিগঞ্জের আমলশীদ, পল্লিাকান্দি, বারঠাকুরী, শরিফগঞ্জ, খাসিরচক, সোনাসারসহ বেশ কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। শুক্রবার সকালে এসব এলাকা পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে যায়। একই সঙ্গে জকিগঞ্জ উপজেলা সদরের সঙ্গে অমলশিদ যাতায়াতের রাস্তাটিও পানিতে ডুবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে সকাল থেকে এ রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আলী মর্তুজা জানান, গত কয়েকদিন ধরে কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ এলাকার বিভিন্ন স্থানে ডাইকের উপর দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। সেই পানিতেই ঘরবাড়ি, গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে সুরমা-কুশিয়ারার উৎপত্তিস্থলে ভাঙনের কারণে সরাসরি বরাক নদীর পানি ঢুকছে লোকালয়ে। এতে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

অমলশিদ গ্রামের বাসিন্দা শামীম জানান, পাহাড়ি ঢলের প্রথম ধাক্কায় ডাইকের অন্তত ২০-৩০ ফুট ভেঙে যায়। ধীরে ধীরে পানির চাপে ডাইকটি আরো ভাঙতে থাকে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ডাইকের কমপক্ষে ৫০ ফুট অংশ ভেঙে গেছে। এ অবস্থায় সরাসরি বরাক নদী থেকে আসা ঢল সুরমা-কুশিয়ারায় প্রবাহিত হওয়ার পাশাপাশি আমলশীদ এলাকার লোকালয়ে ঢুকছে।

জকিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পল্লব হোম দাস বলেন, বরাক নদীর পানি সবচেয়ে বেশি প্রবাহিত হয় কুশিয়ারা দিয়ে। সুরমা-কুশিয়ারার উৎপত্তিস্থলে ডাইকের অন্তত ৩০ ফুট ভেঙে গেছে। ফলে বরাক থেকে আসা ঢল দুই নদী দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পাশাপাশি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।

তিনি বলেন, আমি শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পানির প্রবল স্রোত থাকায় এই মুহূর্তে ডাইকটি রক্ষা করা সম্ভব নয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)