দেবহাটায় ছাত্রী ধর্ষণ মামলার আসামী শিক্ষক ফজর আলীর স্থায়ী বহিস্কারের দাবিতে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার:

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলাধীন হাদিপুর মাদ্রাসার ছাত্রী ধর্ষণ মামলার চার্জশীটভূক্ত আসামী বহিষ্কৃত শিক্ষক ফজর আলীকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। সাথে সাথে প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে মাদ্রাসায় যোগাদানের চেষ্টারও প্রতিবাদ জানিয়েছেন মানববন্ধনে। রবিবার বেলা ১১ টায় মাদ্রাসার সম্মূখ সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে হাদিপুর, জগন্নাথপুর গ্রামের মানুষের প্রতিবাদ দেখে তাতে অংশ নেয় স্থানীয় স্কুল ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও। এসময় বক্তব্য রাখেন স্থানীয় ব্যক্তিত্ব বাবুর আলী, জহুরুল হক, ইয়াকুব আলী, ইদ্রিস আলী সহ আরো অনেকে।

বক্তারা বলেন, গত ১১ এপ্রিল বহিস্কৃত শিক্ষক ফজর আলী মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইউএনও এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী ও থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্লাহ সহ পুুলিশ নিয়ে জোরপূর্বক মাদ্রাসায় যোগদান করতে এসে আইনী জটিলতায় ও  অভিভাবকদের প্রতিরোধে ব্যার্থ হয়। এই ফজর আলী যে সনদে চাকরি করছে সেটি সঠিক নয়। তদন্ত করলে তার জালজালিয়াতি ধরা পড়বে। তার হাতে কোন ছাত্রী নিরাপদ না। তিনি যদি আমাদের মাদ্রাসায় আসে তাহলে এখানে কোন ছাত্র-ছাত্রী পড়তে আসবে না। তার নোংরা চরিত্রের জন্য আজকে আমরা সন্তানদের এই প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে ভয় পায়।

বক্তারা আরো বলেন, শুধু তাই নয় সে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার আসামী। তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান থাকার পরেও কিভাবে সে মাদ্রাসায় যোগদান করতে পারে। সে যোগদান করে পূর্বের চরিত্রে ফিরে যাবে না এমন কি নিশ্চয়তা রয়েছে। আমরা চাই মাদ্রাসাটি সুন্দর ও সুষ্ঠ ভাবে পরিচালিত হোক। আমরা চাই ধর্ষকমুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ এমন জঘন্য মানুষকে নতুন করে মাদ্রাসায় সুযোগ না দেওয়া হোক। এমন একজন অপরাধীকে উপজেলা ২ অভিভাবক অফিসার কিভাবে যোগদান করাতে নিয়ে আসে সেটাই আমাদের প্রশ্ন। আমরা চাই এই ফজর আলিকে স্থায়ী বহিস্কার করে কলংঙ্ক মুক্ত হোক প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে, এলাকাবাসী ফজর আলি বিচারাধীন মামলার আসামী, অবৈধ নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক উল্লেখ করে তার স্থায়ী বরখাস্তর দাবি জানিয়ে মাদ্রাসা বোর্ড চেয়ারম্যান, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারকে মানববন্ধন পরবর্তী স্মারক লিপি প্রেরণ করা হয়। একই সাথে ফজর আলির নামে ধর্ষণ মামলা দ্রুত শেষ করে শাস্তির আওতায় আনতে বিজ্ঞ জেলা জজ এবং বহিষ্কার মামলায় বিচার করতে বিজ্ঞ বিচারপতির নিকট অনুরোধ জানান তারা।

উল্লেখ্য যে, হাদিপুর মাদ্রাসার আইসিটি শিক্ষক ফজর আলির বিরুদ্ধে নিজ মাদ্রাসার ছাত্রী ও তার সহকর্মীর কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্তের অভিযোগে পৃথক মামলা চলমান রয়েছে। আদালতে উক্ত দুই মামলার চার্জশীট জমা দিয়েছে পুলিশ। এঘটনায় নীতিমালার আলোকে মাদ্রাসার শিক্ষক ফজর আলিকে বোর্ড মিটিং এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক বহিস্কার করা হয়। পরবর্তীতে সে যোগদানের চেষ্টা করলেও আইনীয় জটিলতায় কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সবশেষ ১১ এপ্রিল উপজেলা দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে নিয়ে যোগদানের জন্য মাদ্রাসায় যান। কিন্তু মামলা চলমান থাকায় তাকে যোগদান করানো হয়নি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)