ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাপা সিরাপ বিক্রি বন্ধ
নিউজ ডেস্কঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির পক্ষ থেকে নাপা সিরাপ বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে সমিতির পক্ষ থেকে জেলার সব ওষুধ ব্যবসায়ীকে অনুরোধও করা হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু কাউসার এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু নাপা সিরাপ খেয়ে দুই শিশু মৃত্যুর বিষয়টি সামনে এসেছে। এজন্য সমিতির সকল সদস্যকে সাময়িকভাবে নাপা সিরাপ বিক্রি বন্ধ রাখতে পরামর্শ দিয়েছি। ল্যাবরেটরি টেস্টসহ পরবর্তী ফলাফল না আসা পর্যন্ত নির্দেশনা কার্যকর থাকবে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ড্রাগ সুপারেনটেনডেন্ট হোসেন মোহাম্মদ ইমরান জানান, নাপা সিরাপটি প্রকৃত অর্থে বেক্সিমকো কোম্পানির কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নাপা সিরাপ খেয়ে মারা গেছে, না অন্য কোনো কারণ আছে সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মেডিকেল টিম গঠন করা হচ্ছে। পোস্টমর্টেম ভিসেরা রিপোর্ট আসবে। কেমিক্যাল রিপোর্ট আসবে। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগার থেকে রিপোর্ট আসলেই বুঝতে পারব আসলে প্রকৃত ঘটনা কী।
তিনি আরো বলেন, ‘নাপা এই ব্যাচের ওষুধ সারা দেশেই ল্যাবরেটরি টেস্ট করা হবে। কেমিক্যাল টেস্টের পরে নীতিবাচক কিছু পেলে বলা যাবে যে, নাপা সিরাপের কারণেই শিশুদের মৃত্যু হয়েছে। তবে যেহেতু একটি ঘটনা ঘটেছে, তাই আমরা ওই ব্যাচের নাপা সিরাপগুলো মার্কেটে বাজারজাত না করার পাশপাশি বিক্রি বন্ধ রাখার জন্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতিকে নির্দেশনা প্রদান করেছি।’
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান জানান, দুই শিশু মৃত্যুর ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। তাদের পোস্টমর্টেম ও ভিসেরা রিপোর্ট আসলে পরবর্তী সময়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। এছাড়া নাপা সিরাপের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এটি ল্যাবরেটরি টেস্ট করার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুরে ইটভাটা শ্রমিক সুজন খানের দুই সন্তান ইয়াসিন খান ও মোরসালিন খান জ্বরে আক্রান্ত হয়। পরে সুজনের স্ত্রী লিমা বেগম বাড়ির পাশের বাজারের মাঈন উদ্দিনের ওষুধের দোকান থেকে নাপা সিরাপ এনে খাওয়ান। ওই সিপার খাওয়ানো কিছুক্ষণ পর থেকেই দুই শিশুই বমি করতে থাকে। একপর্যায়ে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে তাদেরকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতাল পরে উন্নত চিকিৎসা জন্য জেলা সদর হাসাপাতালে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন চিকিৎসক। বাড়িতে নিয়ে আসার পথে প্রথমে বড় ভাই ইয়াসিন খানের মৃত্যু হয় এবং পরে বাড়িতে ফেরার পর ছোট ভাই মোরসালিন খানের মৃত্যু হয়।