ইউক্রেনে বাংলাদেশী জাহাজে আটকা পড়া সাতক্ষীরার ক্যাপ্টেন মনসুরুল আলমের পরিবারে চলছে উদ্বেক উৎকন্ঠা

আসাদুজ্জামানঃ

যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকা পড়েছে
বাংলাদেশী জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। আটকা পড়া জাহাজে ২৯ জন বাংলাদেশীর
মধ্যে বরগুনার নাবিক হাদিসুর রহমান ইতিমধ্যে রকেট হামলায় নিহত হয়েছেন। ওই
জাহাজের আটকা পড়েছেন সাতক্ষীরার সন্তান ক্যাপ্টেন মনসুরুল আলম খান। তার
পরিবারের সবাই এখন উদ্বেগ আর উৎকণ্টার মধ্যে জীবন যাপন করছেন। তবে,
বর্তমানে একটি বাংকারে নিরাপদে আছেন বলে আশ^স্ত করা হয়েছে বলে জানান
তারা।
ক্যাপ্টেন মনসুরুল আলম খান (৩৬) সাতক্ষীরা শহরের নারকেলতলা এলাকায় সেলিম
খানের ছেলে। বাবা অবসরপ্রাপ্ত বিআরডিসি কর্মকর্তা। যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে
ইউক্রেনে আটকা পড়েই বাড়িতে খবর পাঠান ক্যাপ্টেন মনসুরুল আলম খান। এলাকায়
তিনি গিনি নামেই পরিচিত।
ক্যাপ্টেল মনসুরুল আলম খানের তিন ছেলে। ফাহিমি ও ফারহান (১০) যমজ। ছোট
ছেলে ফারদিনের বছর তিন বছর। যমজ দুই ছেলে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ক্যাপ্টেন মনসুরুল আলম খানের বাবা সেলিম খান জানান, গত বৃহস্পতিবার
সন্ধ্যায় বাড়িতে কথা বলেছেন গিনি। জানিয়েছেন ভালো আছে। সন্ধ্যার দিকে
ইউক্রেনের ওয়ালভিয়া বন্দরে তাদেরকে নামানো হয়েছে। এখন সেখানেই রয়েছে।
ছেলেটার জন্য বাড়ির সকলেই খুব চিহ্নিত। ওর মা স্ত্রী সারাদিন কান্নাকাটি
করছে।
সেলিম আলম খান আরো বলেন, ১৬ বছর আগে জাহাজের ক্যাপ্টেন পদে চাকুরীতে
যোগদান করে গিনি। সবশেষ তিন মাস আগে বাড়িতে এসেছিল। ৬-৭ মাস পর পর
বাড়িতে আসে। ইউক্রেনে গিয়ে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে আটকা পড়বে এটি কেউ
ধারণা করতে পারেনি। জাহাজে রকেট হামলার পর এই প্রথম কথা হয়েছে। সেখানে
খাবারের সমস্যা হচ্ছে। অল্প খাবার খাচ্ছে জাহাজে আটকা পড়া বাংলাদেশীরা।
সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ রাখছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিপিং অফিস
থেকে যোগাযোগ করে বলেছেন আমরা উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছি। আপনারা
দুশ্চিন্তা করবেন না।
সরকার দ্রæত পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইউক্রেনীরা মাইন বসিয়েছে রেখেছিল সেকারণে
বাংলাদেশী জাহাজটি বের হতে পারেনি। ওখানেই আটকা রয়েছে। সেখানে
নেটওয়ার্ক ও ফোনে চার্জ না থাকায় খুববেশী যোগাযোগ করতে পারছে না।
ক্যাপ্টেনের একমাত্র ছোট বোন সাবরিনা খান জানান, জাহাজে আটকা পড়া
সবাইকে নিরাপদে রাখা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। বাংলাদেশ শিপিং
কর্পোরেশনের সহযোগিতায় তারা জাহাজ থেকে ইতিমধ্যে নামতে পেরেছে। তারা
বর্তমানে একটি বাংকারে রয়েছে। এখন কিছুটা নিরাপদে রয়েছে। তার
প্রতিশ্রুতি দিয়েছে খুব তাড়াতাড়ি যে ২৮ নাবিক আটকা পড়ে আছে তাদের
সবাইকে নিরাপদে দেশে এনে তাদের নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পেল্যান্ড অ্যাম্বাসির কথা হয়েছে তারা তাদের দেশে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাবে সেই আশস্ত
করেছেন। আমারা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি আমাদের ভাইয়ের জন্য।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কবির বলেন, বিষয়টি
শুনেছি জাহাজের ক্যাপ্টেন একজনের বাড়ি সাতক্ষীরাতে। তবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের
কাছ থেকে এমন কোন ম্যাসেজ এখনো পাইনি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)