দাপুটে জয়ে আফগানদের উড়িয়ে বাংলাদেশের সিরিজ জয়
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে জিতে অর্ধেক কাজ আগেই সেরে রেখেছিল বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে বাকি কাজও সম্পন্ন করে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগাররা।
আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ৩০৬ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৪৫.১ ওভারে অল আউট হওয়ার আগে ২১৮ রান সংগ্রহ করতে পারে আফগানিস্তান। টাইগারদের জয় ৮৮ রানে।
এই জয়ে একইসঙ্গে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ সুপার লিগের প্রথম দল হিসেবে ১০০ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে উঠে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে।
আফগানদের হয়ে রান তাড়া করতে নেমে একদম শুরুতেই রান আউট হন এ ম্যাচে দলে সুযোগ পাওয়া রিয়াজ হাসান। আফিফ হোসেনের দুর্দান্ত ডাইরেক্ট থ্রোতে সাজঘরে ফেরার আগে ১ রান করেন তিনি।
আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদীকে ৫ রানের বেশি করতে দেননি শরিফুল ইসলাম। এরপর আজমতুল্লাহ ওমরজাইকে ৯ রানে স্ট্যাম্পিংইয়ের ফাঁদে ফেলেন সাকিব আল হাসান।
মাত্র ৩৪ রানে তিন উইকেট হারানো আফগানিস্তানের হাল ধরেন রহমত শাহ ও নাজিবুল্লাহ জাদরান। দুজনে গড়েন ৮৯ রানের জুটি। দুজনেই পূরণ করেন ফিফটি।
৫২ রানে রহমত আউট হওয়ার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি নাজিবও। এই ব্যাটার করেন ৫৪ রান। রহমানুল্লাহ গুরবাজ ৭ রানে আউট হলে ম্যাচের পাল্লা বাংলাদেশের দিকে অনেকটাই ঝুঁকে পড়ে।
তবে এমতাবস্থায় মোহাম্মদ নবী ও রশিদ খান আবারো প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। দুজনের লড়াইয়ে বলা যায় টাইগারদের জয়ের অপেক্ষাটাই শুধু বাড়ে। ৩২ রান করা নবীকে আউট করে রশিদ খানের সঙ্গে তার ৩৩ রানের জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
রশিদ খান ২৯ রানে আউট হওয়ার পর বাকি কেউই টিকতে পারেননি। রিয়াদ ও আফিফ এসে আফগানদের লেজ ছাঁটাইয়ের কাজ সারেন। তাসকিন আহমেদ ও সাকিব আল হাসান নেন দুটি করে উইকেট। শরিফুল, মেহেদী ও মুস্তাফিজ একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ইনিংস উদ্বোধনে তার সঙ্গে নামেন লিটন দাস।
তামিম-লিটনের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৩৮ রান। ওভারপ্রতি ঠিক ৬ করে রান আসা জুটিটি ভাঙেন ফকল হক ফারুকি। তার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ১২ রান কর তামিম ইকবাল।
এরপর সাকিব আল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ৪৫ রানের জুটি গড়েন লিটন। এই দুজনের ব্যাটে যখন ম্যাচে প্রাধান্য বিস্তারের অপেক্ষায় বাংলাদেশ, তখনই আঘাত হানেন রশিদ খান। এই লেগ স্পিনারের বলে এলবিডব্লিউ হন সাকিব। এর আগে টাইগার অলরাউন্ডার করেন ২০ রান।
এরপর আফগান বোলারদের আর কোনো সুযোগ না দিয়ে দলের ইনিংস এগিয়ে নিতে থাকেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। রশিদ খানকে কভারের ওপর দিয়ে হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূরণ করেন লিটন।
ক্যারিয়ারের পঞ্চম শতক পূরণের পথে লিটন খেললেন ১০৭ বল। শেষ পর্যন্ত ১২৬ বলে ১৩৬ রান করে আউট হন টাইগার ওপেনার। তার ইনিংসে ছিল ১৬টি চার ও দুটি ছক্কা।
লিটন বিদায় নিলে ভাঙে মুশফিকের সঙ্গে তার ২০২ রানের জুটি। সঙ্গীর বিদায়ের পরের বলে সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহিমও। তিনি ৯৩ বলে ৮৬ রান করেন। দুজনকেই আউট করেন ফরিদ আহমেদ।
আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে ইনিংসের বাকিটা শেষ করেন। এই দুজন অপরাজিত থাকেন যথাক্রমে ১৩ ও ৬ রানে। শেষ পাঁচ ওভারে মাত্র ৩৬ রান সংগ্রহ করতে পারে বাংলাদেশ। আফগানদের হয়ে ফরিদ দুটি এবং ফারুকি ও রশিদ খান একটি করে উইকেট নেন।