একদিনে কোটি টিকা: ভোর থেকেই টিকাকেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন

একদিনে দেশের এক কোটি মানুষকে করোনা টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এই বিশেষ ক্যাম্পেইনে শুরু হয়েছে গণটিকাদানের এই কার্যক্রম। এদিন জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই টিকার প্রথম ডোজ নেওয়া যাবে। এজন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে সারাদেশের টিকাদান কেন্দ্র।

বিশেষ এ ক্যাম্পেইনকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে ভোর থেকেই মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর থেকে জানান, আজকেই প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া শেষ হচ্ছে এমন ঘোষণায়, যারা এখনও টিকা নেননি তারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। গাজীপুরের হাসপাতালসহ সবগুলো টিকাকেন্দ্রে রয়েছে নানা বয়সী নারী-পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। ভোররাত থেকেই টিকাকেন্দ্রের সামনে এসে ভিড় জমাতে থাকেন তারা। সবখানেই রয়েছে দীর্ঘ লাইন। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই  উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।

গাজীপুরে এ পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে প্রায় ৩৮ লাখ মানুষ। আজকে গাজীপুর মহানগর ও জেলা জুড়ে চার লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার টার্গেট রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে এবং ধৈর্য ধরে টিকা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাগণ।

নিজস্ব প্রতিনিধি, সাভার থেকে জানান, সাভারেও গণ টিকাকেন্দ্রে ভিড় রয়েছে। এর আগে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে যে উপচে পড়া ভিড় ছিলো, তার থেকে কিছুটা কম ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

এদিকে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এলাকার টিকাকেন্দ্র গুলোতে টিকা গ্রহিতাদের উপচে পরা ভিড় দেখা গেছে। টিকা নিতে আসা অধিকাংশ মানুষ নিম্ন আয়ের ও পোশাক শ্রমিক। পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিমশিম খাচ্ছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা জানিয়েছেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লক্ষাধিক মানুষ টিকা নিয়েছেন। আজও গণটিকা প্রত্যাশীদের ভিড় রয়েছে।  নারী ও পুরুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগের দিন গুলোতে থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম ২৬ ফেব্রুয়ারি ‘বিশেষ টিকা ক্যাম্পেইন’ পরিচালনা করা হবে বলে জানান।

অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক জানিয়েছেন, ২৬ ফেব্রুয়ারির আগ পর্যন্ত প্রথম ডোজের টিকা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। যাদের জন্মনিবন্ধন ও পাসপোর্ট নেই, তারা ২৬ ফেব্রুয়ারির আগে সরাসরি হাসপাতাল ও টিকাকেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিতে পারবেন। মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে তাদের তথ্য নথিভুক্ত করে টিকা দেওয়া হবে। তাদের একটি করে কার্ড দেওয়া হবে। সেটিই হবে টিকা নেওয়ার প্রমাণ। এসব কিছুর প্রস্তুতি এবং নির্দেশনা ইতিমধ্যেই দেশের সব সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে।

ডা. শামসুল হক জানান, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিটি জোনে ৩০টি, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রতিটি জোনে ৪০টি, বরিশাল, সিলেট, কুমিল্লা এবং ময়মনসিংহে প্রতিটি জোনে ৬০টি করে এবং খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম এবং রংপুরের প্রতিটি জোনে অতিরিক্ত ২৫টি করে ভ্রাম্যমাণ দল থাকবে। ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলার প্রতিটি দল ৩০০ জনকে এবং সিটি করপোরেশনের প্রতিটি দল ৫০০ জনকে টিকা দেবে।

বাংলাদেশে গত বছরের সাত ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া শুরু হয়। দুই মাস পর আট এপ্রিল শুরু হয় দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম। আর গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)