ইটভাটায় নারী শ্রমিকের  রহস্যজনক মৃত্যু

কিশোর কুমারঃ
সাতক্ষীরার  পাটকেলঘাটার ইটভাটায় এক নারী শ্রমিকের  রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে পাটকেলঘাটা থানার মির্জাপুর সংলগ্ন মোল্লা ব্রিকস থেকে  ওই নারীর  লাশ উদ্ধার করে ভাটার শ্রমিকরা  নিহতের  পরিবারকে জানায় ।এরপর  এলাকার একটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায়  ঘটনাটি ধামা চাপা দিয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় নিহতের পারিবারিক কবরস্থানে   লাশ দাফন করা হয়। নিহত গৃহবধুর নাম রিক্তা খাতুন (৩৬)।সে পাটকেলঘাটা থানার  সেনপুর গ্রামের  মোসলেম সরদারের মেয়ে ও একই থানার  দাদপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ চৌধুরীর দ্বিতীয়  স্ত্রী।   বর্তমানে নিহতের ঘরে ১৪ বছর বয়সী  মাদ্রাসায় পড়ুয়া একটি  ছেলে সন্তান রয়েছে । সরজমিনে গেলে নিহতের ভাই শরিফুল ইসলাম জানায়, আমার আপা রিক্তা জীবিকার তাগিতে  ৬-৭  বছর সৌদিআরবে ছিলেন। সেখান থেকে ৬ মাস আগে বাড়িতে ফিরে আসে।  প্রবাসে  থাকা কালীন ২০১৮ সালে পাশের  দাদপুর চৌধুরি পাড়া এলাকার আব্দুল  হামিদ  চৌধুরি ওরফে চেনাকে দ্বিতীয়  বিয়ে করে সে। কিন্তু  সেটা  আমি মৃত্যুর কিছুদিন আগে জানতে পারি। সপ্তাহ খানেক আগে আপা মির্জাপুর  এলাকার জৈনেক  মোজামের  মোল্লা  ব্রিকসে  কাজ করতে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে   যায়। বুধবার সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ  জানতে পারি যে আমার নাকি ভাটায়   আপা মারা গেছে। তারপর আমরা  লাশ নিয়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে দিই । তিনি আরো জানান, প্রবাসে  থাকা কালীন আমার আপার কাছ থেকে হামিদ  বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পরবর্তীতে সে সংসারের আশ্বাস দিয়ে আমার আপাকে কৌশালে  বাড়ি থেকে বের করে  নিয়ে যায়।  এখন আমার আপা মারা গেছে আল্লাহ তার বিচার করবে। এঘটনায়  আমরা মামলা করতে গেলে স্থানীয় কিছু লোক আপা স্ট্রোকে মারা গেছে   মামলা করে কোন লাভ নেই বলে পরামর্শ দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জানায়, ওই নারীর সাথে গোপনে বিয়ে করে হামিদ সেই সুবাদে তার  ওখানে  প্রায় যাতায়াত করত সে । মৃত্যুর আগের দিনও হামিদ তার সাথে দেখা করেছে পরের দিন তার রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়। ঘটনার দিন হামিদ  চৌধুরি মোটাঅংকের অর্থের বিনিময়ে লাশ দাফন করে ঘটনাটি ধামা চাপা দিয়েছে।সেনপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম জানান, মৃত্যুর ঘাটনাটি শুনেছি কি কারনে তার মৃত্যু হয়েছে সেটি  আমার জানা নেই।
মোল্লা  ব্রিকসের মালিক  সেহারাব হেসেন   জানায়, বুধাবার  আমাদের ইটভাটায় রিক্তা নামে এক নারী শ্রমিক মারা যায় । বিষয়টি আমার ভাটার সর্দার ইবাদুল ভাল বলতে পারবে। পরবর্তীতে ইট  ভাটার সরদার ইবাদুলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ওই নারীর স্বামী হামিদ  ইটভাটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য  কাজ ঠিক করে দিয়েছিল । সেই সুবাদে ভাটায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার। ঘটনার আগের দিন সন্ধ্যায় সে ওই নারীর কাছে এসেছিল। পরের দিন সকালে ভাটার ওই ঘরে তার লাশ দেখে আমরা  তার পরিবারের লোকদের জানাই। এবিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল হামিদ  চৌধুরির সাথে কথা বলার জন্য
তার ব্যাবহারিত মুঠোফোনের  01730-927024 নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি  সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এদিকে হামিদ চৌধুরীর  জামাতা চঞ্চল চৌধুরি জানায়,  আমার শ্বশুর সেনপুর গ্রামের  রিক্তা খাতুনকে   দ্বিতীয়  বিয়ে করেছিল বলে  শুনেছি। তবে কিছুদিন আগে তাদের  ডির্ভোস  হয়ে যায়। বর্তমানে তার সাথে কারো কোন সম্পৃক্তা নেই।  তবে  ওই নারী  স্ট্রোকে  মৃত্যু বরন করেছে বলে তিনি জোর দাবী জানান।
বিষয়টি নিয়ে পাটকেলঘাটা থানা পরিদর্শক কাঞ্চন কুমার রায়ের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ঘটনাটি আমার জানা নেই তবে
এ বিষয়ে খোজ খবর নিচ্ছি।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)