তালায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যার প্রচার দেওয়া ঘাতক স্বামীসহ হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব  প্রতিনিধিঃ

সাতক্ষীরার তালার আটারই গ্রামে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে
পিটিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যার প্রচার দেওয়া ঘাতক স্বামীসহ হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও
দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুরে সাতক্ষীরা
প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলন করেন, নিহত গৃহবধুর বাবা
তালা উপজেলার আমানুল্যাহপুর গ্রামের সূর্যকান্ত দাস।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ৫ বছর পূর্বে আমার কন্যা শিখা রানী দাসকে তালা সদরের
আটারই গ্রামের অনিল দাসের পুত্র গোবিন্দ দাসের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই
গোবিন্দ আমার কন্যাকে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করতো। আমার অর্থনৈতিক অবস্থার
কথা চিন্তা করে আমার কন্যা শিখা রানী সব নির্যাতন সহ্য করে আসছিলো। কিন্তু স্বামী
গোবিন্দ, তার শ্বশুড়ী বিল্ব দাসী, শ্বশুর অনিল রিশি একত্রে আমার কন্যাকে মারপিটসহ শারিরীক ও
মানষিক নির্যাতন করতে থাকে। কোন উপায় না পেয়ে আমার কন্যা আমাদের জানালে স্থানীয়
ইউপি চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিকবার
শালিস করেও তেমন কোন সমাধান হয়নি। এরই মধ্যে গোবিন্দের ঔরশে আমার কন্যার গর্ভে
দুটি কন্যা সন্তানও জন্মগ্রহণ করে। কন্যাদের মুখের দিকে তাকিয়ে আমার কন্যা শিখা রানী
সংসার করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, গত ১ জানুয়ারী ০২২ তারিখ সকালে
আমার কন্যা শিখা রাণী আমাকে ফোন করে জানায় যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী গোবিন্দ,
তার শ্বশুড়ী বিল্ব দাসী, শ্বশুর অনিল দাস তাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজসহ মারপিট করছে।
একপর্যায়ে আমাকে ফোন দেওয়ার খবর জানতে পেরে উত্তেজিত হয়ে তার স্বামী গোবিন্দ, তার
শ্বশুড়ী বিল্ব দাসী, শ্বশুর অনিল দাস আমার কন্যাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং এ হত্যাকে
আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য তার মরদেহটিকে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখে।
পরবর্তীতে গোবিন্দ আমাকে ফোনে জানায় আমার কন্যা আত্মহত্যা করেছে। আমি
গোবিন্দদের বাড়িতে গিয়ে দেখি স্বামী গোবিন্দ, তার শ্বশুড়ী বিল্ব দাসী, শ্বশুর অনিল দাস
পলাতক রয়েছে এবং আমার কন্যার লাশ বারান্দায় শোয়ানো রয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ
ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যে তার শ্বাশুড়ী বিল্ব দাসীকে আটক করেছে। কিন্তু মূল হত্যাকারী
স্বামী গোবিন্দ ও শ^শুর অনিল এখনো পলাতক রয়েছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময়
একজন অসহায় পিতা হিসাবে তার কন্যার হত্যাকারী স্বামী গোবিন্দ, শ^শুর অনিল ও শ^াশুড়ি
বিল্ব দাসীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির জন্য সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু
হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নিহতের মাতা ও
ভাইসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় জানান, শিখা রানী
দাসকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায়
শিখার বাবা সূর্যকান্ত দাস বাদি হয়ে শিখার স্বামী গোবিন্দ দাস, শ্বশুর অনিল দাস, শ্বশুড়ি
বিল্ব বালা দাস ও দেবর মান্দার দাসের নাম উলেখ করে রবিবার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের
করেছেন। ইতিমধ্যে নিহতের শ^াশুড়ি বিল্ব দাসীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল
হাজতে পাঠানো হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)