সন্ত্রাস দিয়ে সন্ত্রাস দমন করা যায় না-সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল

সাবেক তত্ত্বাধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ্যাড. সুলতানা কামাল বলেছেন, সন্ত্রাস দিয়ে সন্ত্রাস দমন করা যায় না। ২০০৪ সাল থেকে এসব বিষয়ে আমরা কথা বলে আসছি। তিনি বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি কয়েকজন কর্মকর্তার ওপরেই শুধু নয়, রাষ্ট্র যতক্ষণ পর্যন্ত না বলছে এটা আমার নির্দেশে হয় নাই, আমরা সরকার হিসেবে তাদেরকে একাজের দায়িত্ব দেই নাই কিম্বা আমরা তাদের কাছ থেকে জবাবদিহি নিয়েছি, সরকার সেটাও এখন পর্যন্ত বলে নাই। তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত রাষ্ট্র কিম্বা সরকার এ কথা বলবে না ততক্ষণ পর্যন্ত রাষ্ট্র কিম্বা সরকারকে এটার জবাব দিতে হবে।

সুলতানা কামাল আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ সম্পৃক্ততা ছিল। বর্তমান সরকার শুধুমাত্র উন্নয়নের কথাই বলছে কিন্তু দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি অত্যন্ত গভীর সংকটে রয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বেসরকারি সংস্থা ‘উত্তরণ’ ও ‘মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ্যাড. সুলতানা কামাল। জেলা মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি এ্যাড. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এ্যাড. সাইদুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি মাধব চন্দ্র দত্ত প্রমুখ।

সুলতানা কামাল আরও বলেন, মানবাধিকার সুরক্ষার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু সরকার কেবলমাত্র উন্নয়নের কথাই বলে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে সাম্য, মর্যাদা ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে। সেখানে উন্নয়নের বিষয়টি জোরালো নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ঝালকাঠিতে লে র ইি নে আগুন লেগে কতগুলো প্রাণ চলে গেল। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কি একবারও ডেকে নৌপরিবহন মন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেছেন, যে কেন এই ঘটনা ঘটলো? তিনি বলেন, দেশে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটলে সরকার ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে দায় সারতে চায়। বিএনপি বঙ্গবন্ধু হত্যার সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারি উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, জিয়াউর রহমান প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে এই হত্যার সাথে জড়িত ছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি। বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, মানবাধিকার উন্নয়নের বিভিন্ন কাজ করতে না পেরে তারা কেবল গলাবাজিই করছে এবং সড়কসেতু নির্মাণ করেছেন বলে প্রচার করছেন। মানবাধিকার উন্নয়নে তারা কোন কাজ করছেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাহলে আপনারা চেয়ারে বসে আছেন কেন? জনগন কেনই বা আপনাকে ভোট দেবে? বাংলাদেশ উন্নয়নের সূচকে অনেকদূর এগিয়েছে জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, মানবাধিকার সূচকে বাংলাদেশ ক্রমেই নিচের দিকে যাচ্ছে।

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম, দেশটিভির শরীফুল্লাহ্ কায়সার সুমন, উদীচির শেখ সিদ্দিকুর রহমান, জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান দিলু, এ্যাড. শাহনাজ পারভিন মিলি, অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, সনাক সভাপতি অধ্যাপক পবিত্র মোহন দাস, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, মহিলা পরিষদ নেত্রী জোৎ¯œা দত্ত, মানবাধিকার কর্মী শম্পা গোস্বামী, আইডিয়ালের ডা. নজরুল ইসলাম, স্বপন কুমার শীল, এ্যাড. আজাহারুল ইসলাম, চ্যানেল ২৪ এর আমিনা বিলকিস ময়না, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ, নারী নেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি, গণফোরামের আলী নূর খান বাবুল, এ্যাড. কাজী আব্দুল্লাহ আল হাবিব প্রমুখ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)