বিশ্ব দর্শন দিবস আজ

নিউজ ডেস্ক:

১৮ নভেম্বর, আজ বিশ্ব দর্শন দিবস। বিশ্ব দর্শন দিবস ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত একটি আন্তর্জাতিক দিবস যা প্রতি বছর নভেম্বর মাসের তৃতীয় বৃহস্পতিবার পালিত হয়। দিনটি সর্বপ্রথম ২১ নভেম্বর ২০০২ সালে উদযাপিত হয়েছিল। ২০০৫ সাল থেকে নভেম্বরের তৃতীয় বৃহস্পতিবার বিশ্ব দর্শন দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

পাশ্চাত্যের এক চিন্তাবিদ মাছের মতো সাঁতার কাটা আর পাখির মতো আকাশে ওড়ার স্বাধীনতা মানুষকে না দিয়ে জাগতিক সুখকে বিসর্জন দেয়ার কথা বলেছেন। চিন্তাবিদদের এ ধরনের বক্তব্যের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কারণ মানুষ অন্যান্য প্রাণী আর গাছগাছালির শ্রেণিভুক্ত নয়। মানুষের ভেতর আক্রমণাত্মক মনোভাব, প্রতিশোধের নেশা আর না পাওয়ার হাহাকার তাকে পাশবিক পর্যায়ে নিয়ে যায়। আবার হাত দিয়ে আপনি যা খুশি তা-ই করতে পারেন না, মুখ দিয়েও আপনি খেয়ালখুশিমতো কথা বলতে পারেন না। তবে অনুশাসনের মধ্যে কিছু অনুমোদনও দিতে হয়, নইলে মানবজীবন অসহায় হয়ে পড়ে। তবে সেটা যদি মানুষের জন্য বেশি অকল্যাণকর হয় তাহলে পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়াই ভালো।

দুনিয়ায় শোরগোল ও হানাহানি থেকে মানবসমাজকে উদ্ধার করতে হলে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হয়। আজ বিশ্বে সহযোগিতার পরিবর্তে প্রতিযোগিতা, ভ্রাতৃত্বের পরিবর্তে শত্রুতা, মানবিক সম্পর্কের পরিবর্তে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুঁজির দাপট এবং মুনাফা লাভের প্রতিযোগিতা চলছে। হতাশা ও সংশয় মানবসমাজকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধ থেকে মানবজাতিকে বাঁচানোর চিন্তা করেছিলেন দার্শনিক আর এম হেয়ার এবং বার্ট্রান্ড রাসেল। আর এম হোয়ার জাতীয়তাবাদ ও গোঁড়ামিকে যুদ্ধের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। উগ্র জাতীয়তাবাদী হওয়ার কারণেই হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করেছিলেন। রাসেল যুদ্ধ থেকে মানবজাতিকে মুক্তি দেয়ার জন্য বিশ্ব সরকারের ধারণা প্রচার করেন।

শান্তির পূর্বশর্ত হল সত্য জ্ঞান। যে জ্ঞান লাভ করার পর একজন ব্যক্তি আচরণগতভাবে সংযত হয়। এ জ্ঞান যদি প্রত্যেক মানুষের মধ্যে থাকে, তাহলে হাঙ্গামা ও দাঙ্গামুক্ত হবে বিশ্বসমাজ। গ্রিক মহাগুরু সক্রেটিস তাই বলেছিলেন- ‘নলেজ ইজ ভার্চু এন্ড ভার্চু ইজ নলেজ’ জ্ঞানই পুণ্য এবং পুণ্যই জ্ঞান। একজন মানুষ যদি জ্ঞানী হন, তাহলে তিনি পুণ্যকাজ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেন না। আর জ্ঞানটা হতে হবে সত্যের জ্ঞান। কারণ একজন ব্যক্তি অনেক কিছু জানেন। কিন্তু যা জানেন তা যদি ভুল হয় তাহলে তিনি মূর্খ। আর একজন ব্যক্তি যদি সত্য জানেন কিন্তু মানেন না, তাহলে তিনিও মূর্খ। মানুষকে সত্যবাদী হতে হবে এবং কাজেকর্মে তার প্রমাণ রাখতে হবে। তাহলে তিনিই হবেন পুণ্যবান ও জ্ঞানী। মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মতে, মানুষ যদি শান্তিতে থাকতে চায়, তাহলে একটা অতি শক্তিশালী সংগঠন তৈরি করতে হবে, যার কথা শুনতে সবাই বাধ্য থাকবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)