বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ শুরু

অনলাইন ডেস্ক:

১৮ নভেম্বর, আজ থেকে শুরু বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ ২০২১। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যন্স সহনীয় মাত্রায় আনার জন্য চিকিৎসকসহ সব পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীদের সচেতনতা তৈরি করতে প্রতিবছরের মতো এ বছরও দিবসটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতি বছরের মতো এ বছর ১৮ থেকে ২৪ নভেম্বর অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ পালন করছে।

সপ্তাহ উপলক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- স্প্রেড অ্যাওয়ারনেস, স্টপ রেজিসট্যান্স অর্থাৎ সচেতনতা ছড়িয়ে দিয়ে এন্টিবায়োটিকের অকার্যকরিতা প্রতিরোধ।

সপ্তাহ উপলক্ষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসেইটে এ সপ্তাহের লক্ষ্য বলা হয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের আরো উত্থান এবং বিস্তার এড়াতে সাধারণ জনগণ, স্বাস্থ্যকর্মী এবং নীতি নির্ধারকদের মধ্যে সেরা অনুশীলনকে উৎসাহিত করা।

তাদের আবিষ্কারের পর থেকে অ্যান্টিবায়োটিকগুলো আধুনিক ওষুধের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। তবে অ্যান্টিবায়োটিকের অবিরাম ব্যবহার ও মানব ও প্রাণী স্বাস্থ্যের অপব্যবহার অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের উত্থান এবং বিস্তারকে উৎসাহিত করেছে যা জীবাণু, যেমন ব্যাক্টেরিয়াগুলো তাদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধী হয়ে ওঠে তখন ঘটে। সপ্তাহ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংগঠন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারা বিশ্বে অ্যান্টিমাইক্রোবাইয়াল রেসিসট্যান্স একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। জীবাণুসমূহ অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেই চলছে। জীবাণুগুলো অনেক রকম অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি প্রতিরোধী হয়ে পড়েছে। ফলে কম বা বেশি দামি সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক সংক্রমণ চিকিৎসায় অকার্যকর হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এতে করে এ ধরনের রোগজীবাণু ব্যক্তির জন্য প্রাণঘাতী হওয়া ছাড়াও সমাজে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারে। তাই এ সংক্রান্ত সচেতনতা তৈরির বিকল্প নেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে চিকিৎসক ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা ঠিক নয়। এটির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতিকর। অ্যান্টিবায়োটিক ঠান্ডা বা ভাইরাসজনিত রোগে কোনো কাজ করে না। যদি ভাইরাসজনিত রোগে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়, তবে বিপজ্জনক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এ ধরনের চিকিৎসা চলতে থাকলে অর্থাৎ অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার যথার্থ না হলে এমন একটা সময় আসবে যখন ব্যাকটেরিয়াকে মারা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

আমাদের দেশে রোগীরা ওষুধের দোকান থেকে মুখস্থ অ্যান্টিবায়োটিক ক্রয় করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সেবন করে থাকেন এবং খুব দ্রুত রোগ থেকে মুক্তি চান। ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের যথার্থ প্রয়োগ না হওয়ায় জীবাণুগুলো আস্তে আস্তে রেজিসট্যান্স হয়ে পড়ছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্য কোনো ওষুধ কিনতে হলে ডাক্তারের পরামর্শপত্র দেখাতে হয়। ডাক্তার ছাড়া অন্য কারও ওষুধ দেয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। আমাদের দেশে চকলেট, মিমির মতো অ্যান্টিবায়োটিক মুহূর্তের মাঝে ক্রয় করে সাধারণ জনগণ নিয়ম না মেনে তা সেবনও করছে। অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অন্য ওষুধের সঙ্গে এর কোনো ইন্টারঅ্যাকশন আছে কি না তা সাধারণ জনগণের অজানা। অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে গিয়ে অনেকে অন্যান্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা খুবই জরুরি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)