বাংলাদেশী উদ্যোক্তারাও ভবিষ্যতে ইউনেস্কো-বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাবে: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, সরকার প্রদত্ত সুযোগ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে একদিন বাংলাদেশেরও কোনো উদ্যোক্তা বঙ্গবন্ধুর নামে ইউনেস্কোর চালু করা ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ পুরস্কার পাবে।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) কর্তৃক ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক পুরস্কার প্রবর্তন করায় সোমবার সংসদের অধিবেশনে আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধিতে সাধারণ আলোচনার জন্য এই প্রস্তাবটি তোলেন। প্রস্তাবে বলা হয়, জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে ইউনেস্কোকে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানানো হোক।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা শেষে সেটি সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর নামে জাতিসংঘের কোনো অঙ্গসংস্থার প্রবর্তন করা প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার এটি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উগান্ডার ‘মোটিভ ক্রিয়েশন লিমিটেড’ এই পুরস্কারটা পেয়েছেন।  তারা তাদের যুবসমাজকে মেধা ও মনন বিকাশে উদ্বুদ্ধ করছেন এবং যে যে কাজে অভ্যস্ত তাদেরকে সে সুযোগটা সৃষ্টি করে দিচ্ছেন। আমাদের বাংলাদেশেও সেভাবেই যুব সমাজ এগিয়ে আসবে, কাজ করবে।

তিনি উদাহরণ দেন আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই থেকে ইয়াং বাংলা নামে যে উদ্যোগটা নেয়া হয়েছে বা স্টার্টআপ প্রোগ্রামের যে সুযোগ সরকার দিয়েছে, সে সুযোগটা নিয়ে আমাদের যুব সমাজ তাদের মেধা ও মনন বিকাশের সুযোগ পাক এবং তারা এগিয়ে আসুক।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আজকে উগান্ডা যেমন এই পুরস্কার পেয়েছে ইনশাল্লাহ একদিন বাংলাদেশেরও কোনো না কোনো উদ্যোক্তা এই পুরস্কারটা পাবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর মেমোরি অব ওয়ার্ল্ডের প্রামাণ্য দলিলে অন্তর্ভুক্ত করায় জাতিসংঘের অবদানকে স্মরণ করেন। জাতির পিতার নামে এই পুরস্কার প্রবর্তনে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইউনেস্কো এবং তাদের সহযোগী বিভিন্ন সংগঠন, দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধিকে ধন্যবাদ জানান।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের, আমির হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম,  আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নুরুল ইসলাম নাহিদ, কাজী নাবিল আহমেদ ও ওয়াশিকা আয়েশা খান, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির মো. মশিউর রহমান রাঙ্গা, মুজিবুল হক চুন্নু, ফখরুল ইমাম,  রুস্তম আলী ফরাজী, বিএনপি’র হারুনুর রশিদ বিশেষ আলোচনায় অংশ নেন।

উল্লেখ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন অঙ্গনে অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর আর্থিক সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন করে থাকে ইউনেস্কো।

বাংলাদেশের প্রস্তাবে গত বছর ডিসেম্বরে ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের শরৎকালীন ২১০তম অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে বঙ্গবন্ধুর নামে ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক এই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

গত বৃহস্পতিবার প্যারিসে প্রথমবারের মত ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’র পুরস্কার দেওয়া হয়।

উগান্ডার ‘মোটিভ ক্রিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন এই পুরস্কার পেয়েছে। প্যারিসে ইউনেস্কো সদর দফতরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পুরস্কার তুলে দেন।

এ পুরস্কার দেওয়া হবে প্রতি দুই বছরে একবার, যার আর্থিক মূল্য ৫০ হাজার ডলার।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)