নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন আছাদুল হক; আসাদুল ইসলামের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিনিধি:

আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দেবহাটার পাঁচটি ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন দলের দেয়া নৌকা প্রতিকের মনোনয়ন বিষয়ে মন্তব্য করে বিতর্ক ও সমালোচনার মুখে পড়েছেন সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি ও কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আছাদুল হক। সম্প্রতি গৌরব ৭১ নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের এক ভিডিও স্বাক্ষাতকারে দেয়া বক্তব্যে আছাদুল হক বলেছিলেন, তিনি দীর্ঘদিন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এবং বর্তমানে সহ-সভাপতি পদে দায়িত্বরত থাকার পাশাপাশি ২০১৬ সাল পর্যন্ত পরপর টানা ৫বার কুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও ওই ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তিনি। কিন্তু তাকে বাদ দিয়ে জামায়তের সাথে সম্পৃক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান আসাদুল ইসলামকে এবার মনোনয়ন দিয়েছে দল। তিনি আরো বলেছিলেন, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে যেসকল ব্যাক্তিদের নৌকার মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তারা অযোগ্য। যুগ যুগ ধরে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখলেও, দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির ক্ষেতে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীর টাকার কাছে হেরে গেছেন তিনি। এজন্য কান্না জড়িত কন্ঠে তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযাত্রী স্থানীয় আ.লীগের নেতাদেরও দোষারোপ করেছিলেন আছাদুল হক। দলীয় সিদ্ধান্তকে অবমাননা করে ভিডিও স্বাক্ষাতকারটিতে তার দেয়া এমন বক্তব্যের পর রীতিমতো ঝড় ওঠে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অঙ্গনে। এতে তার ওপর ক্ষুদ্ধ হন আ.লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ বুধবার রাতে গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে এক ফোনালাপে তার ওই বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি ও কুলিয়ার সাবেক চেয়ারম্যন আসাদুল হক। এসময় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কটাক্ষ করে কোন বক্তব্য দেইনি। দলীয় মনোনয়ন নয়ছয় করায় স্থানীয় যেসব আ.লীগ নেতারা জড়িত আমি তাদের ব্যাপারে বলেছি যে আমার সাথে অবিচার করা হয়েছে। একইসাথে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন প্রাপ্তদের অযোগ্য এবং কুলিয়ার মনোনয়ন প্রাপ্ত নৌকার প্রার্থী আসাদুল ইসলামের সাথে জামায়তের সম্পৃক্ততা রয়েছে সেগুলো বলা তার ঠিক হয়নি বলেও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। আছাদুল হক বলেন, উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের প্রত্যেকে নয়, কয়েকজন অযোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন পেয়েছেন। এছাড়া গোটা জামায়তের সাথে নয়, কিছু জামায়তের লোকের সাথে আসাদুল ইসলামের সখ্যতা রয়েছে বলে দাবী করেন তিনি। আছাদুল হক আরো বলেন, মনোনয়ন পুনঃবিবেচনার জন্য আমি আপিল করেছি। মনোনয়ন পাই বা না পাই শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালি করতে এবং কুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে রক্ষা করতে জনগনের দাবীতে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহন করবো।
এদিকে মনোনয়ন নিয়ে আছাদুল হকের দেয়া ভিডিও স্বাক্ষাতকারের জেরে কুলিয়াতে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেছেন আ.লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আলহাজ্ব আসাদুল ইসলাম ও তার কর্মী সমর্থকরা। বৃহষ্পতিবার সকাল ১০টায় কুলিয়া নতুন বাজার এলাকায় উক্ত প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেন তিনি। মানববন্ধনে বক্তৃতাকালে দলীয় সিদ্ধান্তকে অবমাননা করে আছাদুল হকের দেয়া ওই বক্তব্যে কড়া সমালোচনা করেন আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী আসাদুল ইসলাম। এসময় মুলদল ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকশ নেতাকর্মী ছাড়াও ইউনিয়নের সকল শ্রেনি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)