সাতক্ষীরায় নুরুল আমিনের ২০ বিঘা মাল্টা বাগানে লাখ টাকার বাণিজ্য

রাহাত রাজা:
আম চাষের পর এবার মালটা চাষেও সফলতার মুখ দেখছেন সাতক্ষীরার দি হাইব্রীড নার্সারী মালিক নুরুল আমিন। কৃষিতে বরাবরের মতোই সফল একজন চাষি হিসেবে নাম কুড়িয়েছেন ইতিমধ্যেই। তার চাষ কৌশল দেখতে বিভিন্ন জায়গার সাধারণ কৃষক প্রতিনিয়তই ভিড় জমাচ্ছে মাল্টা বাগানে।

নুরুল আমিন সাতক্ষীরা জেলার পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার বাসিন্দা গেলো তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে নিজেকে ব্যাস্ত রেখেছেন কৃষি কাজের সাথে। ২০০৫ সালে খালেদা জিয়া, ২০১০ সালে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে বৃক্ষরোপনে জাতীয় পুরষ্কার অর্জন করেন নুরুল আমিন।

সেই নুরুল আমিন এবার আমরুপালি বাগানে মাল্টা চাষ করে পেয়েছেন অভবনীয় সাফল্য। সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বাহদুরপুরে তিন বছর পূর্বে ২০ বিঘা জমিতে সাড়ে তিন হাজার মালটা গাছের চারা রোপণ করে মাল্টা চাষ শুরু করেন।
সাধারনত দুই থেকে তিন বছরেই মাল্টা গাছে পরিপূর্ণ ফল আসে। যা নুরুল আমিনের মাল্টা বাগান দেখলেই বোঝা যায়। নুরুল আমিন পাইকাড়ি দরে মাল্টা বিক্রয় করছেন ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।

নুরুল আািমন বলেন আমরুপালীর চেয়ে মাল্টা চাষে বেশি লাভকরা সম্ভব তায় আমরুপালি গাছ কেটে সে বাগানটি মাল্টা বাগান করা হয়েছে।

তার বাগানের মাল্টার আকার এবং রঙ বেশ সুন্দর। স্বাদও চমৎকার। নুরুল-আমিনের এই সাফল্যে সাতক্ষীরার মাটিতে মালটা চাষে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
নুরল-আমিন জানান, মালটা চাষের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কৃষি অফিস ও ইউটিউব থেকে পেয়েছেন। কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত তাকে পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি আরো জানান, মালটা চাষ অন্য যেকোনো ফসলের চেয়ে সহজ।

যেকোনো ধরনের মাটিতেই মালটা চাষ করা সম্ভব। ৮-১০ ফুট দূরত্বে চারাগাছ রোপণ করতে হয়। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই মাল্টা চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। চারার দামও কম। মাত্র ৫০-১০০ টাকায় চারা পাওয়া যাচ্ছে। তিনি নিজেও চারা বিক্রি করছেন।

ইতিমধ্যেই তার বাগানের সবগুলো গাছের ডালে কলম করে চারা তৈরি করেছেন। অনেকেই তার কাছ থেকে চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশী কিছু ফলের চাষ ও চারা তৈরি শুরু করেছেন নুরুল আমিন। এর মধ্যে সূর্যডিম আম, পারসিমন, ডুরিয়ান, রামবুটান, এ্যাভো ক্যাডো সহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছ।
নুরুল আমিন বলেন মাল্টা চাষে বিঘা প্রতি খরচ বাদে এক লাখ টাকা লাভ করা খুব কঠিন নয়। ফরমালিনমুক্ত মালটা উৎপাদনে সাতক্ষীরার চাষিরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আগামীতে আমের মত মাল্টা চাষেও সাতক্ষীরা সুনাম অর্জন করবে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর খামার বাড়ীর উপ পরিচালক মোঃ নূরুল ইসলাম জানান মাল্টা একটি লাভ জনক ফসল। সাতক্ষীরা জেলার মাটি ও আবহাওয়া একটু লবনাক্ত হওয়াতে এ অ লের মাল্টা খুবই সুমিষ্ট হয়েথাকে। এর মধ্যে বারি মাল্টা এক এর মিষ্টতা সবচেয়ে বেশি। এবছর সাতক্ষীরা জেলায় ৬১ হেক্টর জমিতে মাল্টার আবাদ হয়েছে । আগামীতে আমের মত মাল্টা চাষেও সাতক্ষীরা জেলার চাষীরা সুনাম অর্জন করবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)