দেবহাটার জুয়েল হত্যা: দু’দিনের রিমান্ডে ইমরোজ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরার দেবহাটায় চাঞ্চল্যকর জুয়েল হত্যাকান্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার নিহতের অতি ঘনিষ্ট সঙ্গী ইমরোজ আলী ওরফে চোর ইমরোজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বৃহষ্পতিবার সকালে আদালতের নির্দেশে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইমরোজকে দেবহাটা থানায় নেয়া হয়। ইমরোজ আলী দেবহাটার কোঁড়া পাকড়াতলা এলাকার ইসহাক গাজীর ছেলে। এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে জড়িতের বহু অভিযোগ আগে থেকেই রয়েছে ইমরোজের বিরুদ্ধে। এমনকি দেবহাটা থানায় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলাও রয়েছে।

নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার আশিক হাসান জুয়েলের ঘনিষ্ট সঙ্গীদের মধ্যে অন্যতম ছিল ইমরোজ। বিভিন্ন সময়ে জুয়েলে কাছ থেকে আর্থিক সহ নানা সুবিধা ভোগ করতো সে। এবছর বসতভিটাসহ একধিক আম বাগানের আম বিক্রির জন্য ঢাকায় পাঠানোর দায়িত্বও ইমরোজকে দিয়েছিল জুয়েল। তবে হত্যার কিছুদিন আগে আম বিক্রি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ইমরোজের সাথে জুয়েলের গোলযোগ হয়।

গত বুধবার (২জুন) রাত সোয়া ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে দেবহাটা থানা থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে নিজের বাড়ীর পুকুরের সিড়িতে বসে থাকাবস্থায় দূর্বৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে খুন জুয়েল। এঘটনায় নিহত জুয়েলের বড়ভাই আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান রাজু বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিদের আসামী করে দেবহাটা থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-০১) দায়ের করেন।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এপর্যন্ত হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। তবে হত্যার পর থেকে জুয়েলের কললিস্ট অনুসরণসহ বেশ কিছু বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে রহস্য উদঘাটনে অক্লান্ত প্রচেষ্টা ও মামলার তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে জুয়েলের পরিবারের সদস্য ছাড়াও তার কাছের সঙ্গী ইমরোজ আলী ওরফে ইমরোজ চোর, বাড়ির কাজের লোক আলিম, গৃহপরিচারিকা রওশন আরা, শাখরা কোমরপুরের মিনহাজ, নাংলা নওয়াপাড়ার হারুন বিশ্বাসসহ সর্বশেষ বুধবার নিহতের মামা সাবেক মেম্বর মনি ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল খালেক ভোলাকে পৃথক পৃথকভাবে আটকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এদের মধ্যে দূর্ধর্ষ চোর ইমরোজ আলীর আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় শুক্রবার তাকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশের পক্ষ থেকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন জানালে বুধবার শুনানীর দিন ধার্য করে ইমরোজকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত। পরবর্তীতে বুধবার নির্ধারিত দিনে শুনানী শেষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত ইমরোজের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদ আহমেদ বলেন, হত্যার মোটিভ উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নিহতের কললিস্ট অনুসরণ, আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ অ্যানালাইসিস সহ সন্দেহভাজন ব্যাক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। হত্যার স্থান ও লাশ উদ্ধার করা দুটি পুকুরে ডুবুরি দলের সাহায্যে তল্লাশী করা হয়েছে। এছাড়া সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার ইমরোজকে আদলতের নির্দেশে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)