সাতক্ষীরায় নির্যাতনে গৃহবধূর মৃত্যুঃ মেয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে কাঁদলেন বাবা-মা

শহর প্রতিনিধিঃ

প্রথম স্ত্রীকে বাড়ি আনতে হলে পথের কাঁটা আমার মেয়েকে সরিয়ে দিতে হবে। তা না হলে মুম্বাই থেকে প্রথম স্ত্রী আসমা খাতুন ফিরে আসবে না’।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে একথা জানিয়ে নিহত গৃহবধূ শম্পা খাতুনের বাবা দিনমজুর বাবলু সরদার ও তার মা হালিমা খাতুন বলেন, ‘৬ বছর আগে বিয়ের পর থেকে আমাদের মেয়েটিকে নানাভাবে নির্যাতন করতো জামাতা হবিবর রহমান। আমরা কিছু টাকাপয়সা দিয়ে জামাতার মন রক্ষার চেষ্টাও করতাম। কিন্তু পারিনি। শেষ পর্যন্ত গত ১৮ এপ্রিল রাতে আমাদের মেয়ে শম্পাকে শ্বাসরোধ করে ও পিটিয়ে হত্যা করে। পরে তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে প্রচার করে শম্পা আত্মহত্যা করেছে’।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ইন্দিরা গ্রামের এই ঘটনা বর্ননা করতে গিয়ে একই উপজেলার রাজনগর গ্রামের বাবা বাবলু সরদার বলেন, জামাই হবিবর একজন নেশাখোর। সে মাদক কারবার করে। আর ঘরে এসে আমার মেয়েটাকে মারধর করে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মেয়েটি প্রায়ই আমার বাড়ি চলে আসতো। পরে আবারও তার ৪ বছরের সন্তান সহ ফিরে যেতো। কিন্তু সেদিনের যাওয়াই তার শেষ যাওয়া। তিনি বলেন, হবিবরের প্রথম স্ত্রী আসমা খাতুন মুম্বাইয়ে থাকে। এটা না জেনেই আমি তার সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। এখন জানতে পারছি। আসমা খাতুন দেশে ফিরে আসবেন। তাই ‘পথের কাঁটা’ আমার মেয়ে শম্পা বেগমকে সরিয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, মেয়েটির গলায় ছিল ফোলা দাগ। কপালে ছিল আঘাতের চিহ্ন। আমি সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দিয়েছি। আমি মূর্খ মানুষ। পুলিশ কি লিখে নিয়েছে আমি জানি না। এখন পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আসামী হবিবর সহ কাউকে ধরা যাবে না। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। এই হত্যায় জড়িতদের ফাঁসি চাই।

রোববার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাবা বাবলু সরদার, মা হালিমা ও মেয়ে সুমী খাতুন একথা জানান সাংবাদিকদের।
জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ বোরহান উদ্দিন বলেন, শম্পার মৃত্যুর বিষয়ে একটি ইউডি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। হত্যার ঘটনা হয়ে থাকলে অবশ্যই আমরা আসামীকে ধরে আনবো এবং আইনে সোপর্দ করবো। —————-
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)