শাড়ি-ব্লাউজ পরে পুরুষকে করলেন বিয়ে

নিউজ ডেস্কঃ

কবিরাজ পরিচয়ে একেক সময় একেক এলাকায় যাওয়াই আলতাফ আলীর কাজ। তিন মাস আগে যান একটি এলাকায়। সেখানে মাঝে মধ্যেই শাড়ি পরে ঘোরাঘুরি করতেন। বন্ধ্যাত্ব নারীদের সন্তান হওয়ার ঝাড়ফুঁক দিয়ে থাকতেন বিভিন্ন বাড়িতে। এর মধ্যেই এক ছেলেকে ভালো লাগে তার। একপর্যায়ে নারী সেজে সেই ছেলেকে বিয়ে করেন ৩৫ বছর বয়সী এই ভণ্ড কবিরাজ।

বুধবার অদ্ভুত ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর ফালু চাঁনের মাজারপাড় এলাকায়। ভণ্ড কবিরাজ আলতাফের বাড়ি জেলার ঘাটাইল উপজেলার জামুরিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল কাদের।

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় তিন মাস আগে নিজেকে কবিরাজ পরিচয় দিয়ে দাড়িয়াপুর মাজারপাড় এলাকায় আসেন আলতাফ। তিনি মাঝে মধ্যে শাড়ি পরেও এলাকায় ঘোরাফেরা করতেন। নারীদের সন্তান হওয়ার ঝাড়ফুঁক দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন বাড়িতে তিন মাস ধরে থাকছেন। এর মধ্যে একই এলাকার কৃষক রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের হোসেনের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে জুবায়ের ও তার পরিবারকে কবিরাজ আলতাফ বলেন- ‘আমি রাত ১২টার পর মেয়ে মানুষে রূপান্তরিত হবো, ‘আমাকে বিয়ে করলে প্রচুর সম্পত্তির মালিক হবেন।’

কবিরাজের টাকার লোভে পড়ে যান জুবায়েরের পরিবারের লোকজন। পরে তারা মঙ্গলবার রাতে নিজেদের বাড়িতে জুবায়ের ও আলতাফের বিয়ের প্রস্তুতি নেন। বুধবার সকালে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত হয়ে কবিরাজ আলতাফকে ধরে পরনের শাড়ি-ব্লাউজ খুলে গণধোলাই দেন আশপাশের লোকজন। পরে তাকে উদ্ধার করেন দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার আলী আসিফ, সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শামীম ও সানোয়ার হোসেন মাস্টার।

এক লাখ টাকা দেনমোহরে দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের কাজি মাসুদ রানা এ বিয়ে পড়িয়েছেন বলে দাবি স্থানীয়দের। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কাজি মাসুদ রানা।

তিনি বলেন, একটি বিয়ের রেজিস্ট্রি করতে হবে বলে আমাকে ওই এলাকায় যেতে বলা হয়েছিল। ওই বাড়িতে গিয়ে মেয়ের (পাত্রীর) জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে বলি। পরিচয়পত্র দিতে না পারায় আমি সঙ্গে সঙ্গে ফিরে এসেছি। রেজিস্ট্রি বা বিয়ে পড়ানোর তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে।

কবিরাজ আলতাফের পরিবারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ভাতিজা ইয়ামিন বলেন, আলতাফ আলী আমাদের এলাকায়ও (ঘাটাইল) কবিরাজি করতেন। কিন্তু তিনি একটি ছেলেকে বিয়ে করবেন এটা মেনে নিতে পারছি না।

সখীপুর থানার এসআই ওসমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর স্থানীয়রা ওই কবিরাজকে হিজড়া দাবি করেন। পরে স্থানীয়দের অনুরোধেই তাকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)