কঠোর লকডাউনে ফাঁকা চট্টগ্রাম

সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। রাস্তায় কিছু রিকশা এবং ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। এছাড়া বন্দরকেন্দ্রিক কিছু পণ্যবাহী পরিবহন চলছে। নগরের প্রধান প্রধান প্রবেশমুখে কঠোর অবস্থানে দেখা গেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। আবার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে যানবাহন ও সাধারণ মানুষকে।

এতে করে চলাচল করা গাড়িগুলোকে পড়তে হচ্ছে তল্লাশির মুখে। চেকপোস্টে লকডাউনে বের হওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলে যেতে দিচ্ছে, না হয় উল্টো ফিরিয়ে দিতে দেখা গেছে কিছু কিছু যানবাহনকে। আবার সাধারণ মানুষ অর্থাৎ যাদের ক্ষেত্রে ‘মুভমেন্ট পাস’ দরকার তাদের কাছে তা না থাকলে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

সরেজমিন বুধবার (১৪ এপ্রিল) নগরের নতুন ব্রীজ, বহদ্দারহাট, নিউমার্কেট, কাজির দেউড়ী, ইপিজেড, কাস্টম মোড়সহ একাধিক এলাকায় ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ  বলেন, ‘নগরে ট্রাফিক বিভাগের উদ্যোগে ১২টি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সেখানে রাস্তায় চলাচল করা যানবাহনগুলোকে চেক করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলে যেতে দিচ্ছি, না হয় ফিরিয়ে দিচ্ছি।’

ট্রাফিক চট্টগ্রাম বন্দর জোনের প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) জসিম উদ্দিন বলেন, ‘একদিকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা অন্যদিকে আজকে রমজানের শুরু, এছাড়াও পহেলা বৈশাখের বন্ধ থাকায় আজকে রাস্তায় গাড়ি একেবারেই কম। শুধুমাত্র বন্দর ঘিরে কিছু পণ্যবাহী এবং ইপিজেড ঘিরে কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে। আবার ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে এসব গাড়িতেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কি-না যাচাই করা হচ্ছে।’

jagonews24

জানতে চাইলে নগরের ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন  বলেন, ‘মুভমেন্ট পাসের আওতামুক্ত যারা আছে তাদেরকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে হচ্ছে। আবার যাদের ক্ষেত্রে মুভমেন্ট পাস প্রযোজ্য তাদের এই পাস ছাড়া যেতে দেয়া হচ্ছে না।’

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বলেন, ‘কঠোর লকডাউন ও স্বাস্থবিধি নিশ্চিতে আজকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হচ্ছে।’

এদিকে কঠোর লকডাউনে শতভাগ সচল রয়েছে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ৯২ শতাংশের নিয়ন্ত্রণক চট্টগ্রাম বন্দর। শুল্কায়নের জন্য খোলা আছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, ব্যাংকসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘লকডাউনে বন্দরের কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। অপারেশনাল কাজে সবাই যার যার কর্মস্থলে উপস্থিত রয়েছেন। কনটেইনার উঠানামা হচ্ছে। তবে শুধু যারা বন্দর অফিসে কাজে করেন তাদের ক্ষেত্রে উপস্থিতির বিষয়ে শিফটিং সিস্টেম করা হয়েছে। লকডাউনে বন্দর সচল রাখতে আমরা যাবতীয় প্রস্তুতি আগেভাগে নিয়ে রেখেছি।’

চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার ফখরুল আলম , ‘জরুরি সেবার অন্তর্ভুক্ত চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস আজও খোলা আছে। লকডাউনে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে আমাদের কার্যক্রম আগের মত স্বাভাবিক থাকবে।’

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)