সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় আদালতে আরো এক জনের সাক্ষ্য
রঘুনাথ খাঁঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেতা থাকাকালে কলারোয়ায় তার গাড়িবহরে হামলা মামলায় সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আজ রোববার আরো একজন
সাক্ষ্য দিলেন।
এ ছাড়া তিনজন পূনরায় সাক্ষী দেন। এ নিয়ে এ
পর্যন্ত ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করলেন আদালত।
রোববার আদালতে এ মামলায় যারা নতুন সাক্ষ্য দিলেন সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন।
এ ছাড়া কলারোয়ার আওয়ামী লীগ নেতা সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম লাল্টু, মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী পূণরায় স্বাক্ষী দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথীকে
কাঠগোড়ায় আহবান করেও তাকে জেরা করেননি আসামীপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্ণি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী, ডেপুটি এটর্ণি জেনারেল শেখ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও সহকারী এটর্ণি জেনারেল শাহীন মৃধা ও সাতক্ষীরা জজ কোর্টের
পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ।
আসামীপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদব ব্যারিষ্টার মাহাবুবউদ্দিন খোকন, অ্যাড.শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাড. আব্দুল মজিদ(২), অ্যাড. সৈয়দ ইফতেখার আলী, অ্যাড, মিজানুর রহমান পিন্টু।
২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সকাল ১০টার দিকে তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর
ইউনিয়নের হিজলদি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে দেখে মাগুরায় ফিরে যাচ্ছিলেন।
পথিমধ্যে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে রাস্তার উপর জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও
তৎকালিন সাংসদ হাবিবুল ইসলামের হাবিবের নির্দেশে বিএনপি ও যুবদলের নেতা কর্মীরা দলীয় অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহি বাস রাস্তার উপরে আড় করে দিয়ে তার গাড়ি বহরে হামলা চালায়।
হামলায় তৎকালিন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে এক ডজন দলীয় নেতা
কর্মী আহত হয়।
এ ঘটনায় থানা মামলা না নেওয়ায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদি হয়ে যুবদল নেতা
আশরাফ হোসেন, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উলে-খ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনকে আসামী করে সাতক্ষীরা নালিশী আদালত
‘ক’ অঞ্চলে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বিভিন্ন আদালত ঘুরে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করা হয়।
পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলাটি তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে এসটিসি ২০৭/১৫, এসটিসি ২০৮/১৫ দু’টি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২য় আদালতে বিচারাধীন।
২০১৭ সালের ৯ ও ২৩ আগষ্ট আসামীপক্ষ মামলা তিনটির কার্যক্রম হাইকোর্টে স্থগিত করেন। দীর্ঘ তিন বছর পর আসামী পক্ষের মিসকেস খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্ট পেনালকোর্ডের মামলাটি(টিআর-১৫১/১৫) ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য সংশি-ষ্ট নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেন। বিষ্ফোরক দ্রব্য আইন ও অস্ত্র আইনের মামলা দু’টি গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি
মোস্তফাজামান ইসলাম ও বিচারপতি কামরুল ইসলাম মোল-ার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আসামীপক্ষের স্থগিতাদেশ ও আপিল খারিজ
করে দেয়।
অতিরিক্ত এটর্ণি জেনারেল এসএম মুনীর বলেন, এ মামলায় সাবেক সাংসদ ও বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবের বিরুদ্ধে
স্বাক্ষীরা সুনিদ্দিষ্ট অভিযোগ এনেছেন। ২১ ডিসেম্বর আবারো স্বাক্ষীর জন্য দিন ধার্য আছে।