মহামারি সমাপ্তির আশা জাগাচ্ছে ফাইজার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

প্রায় এক বছর ধরে বিশ্বে করোনা মহামারি ধ্বংসলীলা চালিয়ে যাচ্ছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনে প্রথম এই প্রাণঘাতী ভাইরাস ধরা পড়ে। তারপর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে এই ভাইরাস।

এখনও পর্যন্ত করোনার কোনো প্রতিষেধক বা ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। করোনা মহামারি থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হিসেবে ভ্যাকসিনকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সে কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষক ও বিজ্ঞানীরা করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এর মধ্যেই আশার আলো দেখিয়েছে মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজারের তৈরি ভ্যাকসিন। প্রতিষ্ঠানটির বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, তাদের তৈরি ভ্যাকসিনে হয়তো মহামারির সমাপ্তি ঘটবে।

মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ইলি লিলি অ্যান্ড কো.-এর একটি অ্যান্টিবডি থেরাপিতে ফাইজারের ভ্যাকসিনে অসাধারণ ফলাফল পাওয়া গেছে। এটি জরুরি ক্ষেত্রে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

নিজেদের তৈরি ভ্যাকসিনের ৯০ শতাংশ কার্যকারিতা দাবি করেছে ফাইজার ও জার্মান জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেক। ছয় দেশে ৪৩ হাজার ৫০০ জন মানুষের দেহে ভ্যাকসিনটির পরীক্ষা চালিয়ে প্রাথমিকভাবে এমন ফল পাওয়া গেছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভ্যাকসিনটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানোর পর পাওয়া প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, এই ভ্যাকসিনটি নিলে ৯০ শতাংশ মানুষ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হবে না। সুরক্ষায় শতভাগ উতরে গেছে ভ্যাকসিনটি। এ নিয়ে শঙ্কার তেমন কিছু পাওয়া যায়নি পরীক্ষায়।

এর মধ্যেই ১৩ দেশের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ফাইজার-বায়োএনটেকের। সংস্থা দু’টি জানিয়েছে, তারা ভ্যাকসিনের ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডোজ তৈরি করতে পারবে। ২০২১ সালের শেষ নাগাদ ৬৫০ মিলিয়ন মানুষের দেহে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

অপরদিকে ২০২০ সালের শেষের দিকেই ৫০ মিলিয়ন ভ্যাকসিনের ডোজ তৈরি হয়ে যাবে বলেও দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

বিশ্বের বেশ কিছু দেশের তৈরি ভ্যাকসিনই এখন ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার শেষ পর্যায় অর্থাৎ তৃতীয় ধাপে রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ফাইজারের মতো কোনো ভ্যাকসিন ৯০ শতাংশ কার্যকারিতার দাবি করতে পারেনি।

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগের বিশেষজ্ঞ লিন্ডা সেলভে বলেন, ফাইজারের ভ্যাকসিনের সফলতার খবর খুবই আশাব্যঞ্জক। তবে আরও কিছু ভ্যাকসিনের সফলতাও কামনা করেছেন তিনি। তার মতে, কয়েকটি ভ্যাকসিন সহজলভ্য হলে বিশ্বের সব মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া নিশ্চিত করা যাবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)