পরিবারের ‘লজ্জা’ ঢাকতে ধর্ষিতা কিশোরীকে হত্যা করলেন বাবা-ভাই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

পরিবারের ‘লজ্জা’ ঢাকতে প্রতিবেশীর ধর্ষণের শিকার অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করলেন বাবা ও ভাই। এ ঘটনায় দুজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ভারতের উত্তরপ্রদেশের যোগীরাজ্যের শাহজাহানপুর জেলায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।

১৬ বছরের কিশোরী মেয়েটির অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। মেয়ের কৃতকর্মে ঘরের বাইরে পা রাখতে ‘লজ্জা’ বোধ করছিল পরিবারের লোকজন। অবশেষে ধৈর্য হারিয়ে যায় পরিবারের, প্রচণ্ড মারধর করে এবং শেষ পর্যন্ত মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বাবা। বোনকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে উল্টো কিশোরীর ভাইও শামিল হয় পরিবারের ‘সম্মান’ রক্ষায়। শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয় অন্তঃসত্ত্বা ওই কিশোরীর।

এরপর বড় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মৃত মেয়েকে নদীর তীরে পুঁতে রেখে আসেন বাবা। ভেবেছিলেন, কেউ কিছু জানতে পারবে না। কিন্তু পুলিশের কানে পৌঁছে যায় সে খবর। পুলিশ আটক করে বাবা ও তার ভাইকে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েকে খুনের কথা স্বীকার করেন বাবা। জানান, মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিল। গ্রামের লোকের বিদ্রূপ, কটূক্তি আর সহ্য হচ্ছিল না। বাইরে বের হলে লোকজন অপমানজনক কথাবার্তা বলছিল। তাই মেয়েকে খুন করে ফেলেছি। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নদীর তীর থেকে দেহটি উদ্ধার করে শাহজাহানপুরের পুলিশ।

শাহজাহানপুরের এসএসপি এস আনন্দ জানান, পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। এছাড়া মেয়েটির মা ও অন্য আত্মীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে পরিবারের আর কেউ এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন না বলে জানা গেছে।

পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, ওই কিশোরী কোনো দিন স্কুলে পর্যন্ত যায়নি। প্রতিবেশীদেরই কেউ তাকে ধর্ষণ করেছিল। যার কারণে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বারবার মেয়েকে জিজ্ঞাসা করেও ধর্ষকের নাম জানতে পারেনি পরিবার। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত একটি কথাও বের হয়নি তার মুখ থেকে।

পুলিশ জানায়, ধর্ষককে তারা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। নাবালিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক অপরাধ। ফলে যে এই কাজটি করেছে, তার কঠোর সাজা হবে।

মঙ্গলবার পুলিশ কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পরীক্ষার জন্য পাঠায়। জানা গেছে, ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিল ওই কিশোরী। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো জিডি করা হয়নি পুলিশের কাছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)