জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর ৪ প্রস্তাব

অনলাইন ডেস্ক :

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় জাতিসংঘে চারটি প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের সাইডলাইনে ভার্চুয়াল জীববৈচিত্র্য সম্মেলনে দেয়া বিবৃতিতে এ প্রস্তাব দেন। সংবাদ সংস্থা বাসস এ খবর জানিয়েছে।

প্রথম প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পৃথিবী ও আমাদের রক্ষার জন্য বিনিয়োগের সময় টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি মনোযোগী হতে হবে।’

‘টেকসই উন্নয়নের জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ’ শীর্ষক আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থা এবং গবেষণার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বৃহত্তর গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং জাতীয় পর্যায়ে আইনকানুন জোরদার করা এবং নিরীক্ষণ প্রক্রিয়া জীববৈচিত্র্য রক্ষার মূল পদক্ষেপ।’

প্রধানমন্ত্রী তার তৃতীয় প্রস্তাবে বলেন, জেনেটিক রিসোর্স এবং ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানের প্রকৃত মালিকদের জন্য বিশ্বব্যাপী সুফল বাটোয়ারায় প্রবেশাধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

চতুর্থ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্যারিসের (সনদ) লক্ষ্য অর্জন আমাদের বিলুপ্তি ও টিকে থাকার মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পারে। আমাদের অবশ্যই সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।

বাংলাদেশ ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ’-এর ব্যাপারে ‘সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটি আন্তঃনির্ভরশীল বিশ্বে বাস করি, যেখানে পৃথিবী গ্রহের প্রতিটি প্রজাতি আমাদের বাস্তুসংস্থানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

বাংলাদেশ মিঠাপানির ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিঠাপানির জীববৈচিত্র্য বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত হারে হ্রাস পাচ্ছে, বৈশ্বিক জলাভূমির ৮৫ শতাংশ ইতিমধ্যে শিল্পবিপ্লবের পরে হারিয়ে গেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭০ সাল থেকে মিঠাপানির স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, উভচর, সরীসৃপ ও মাছের সংখ্যা প্রতিবছর গড়ে ৪ শতাংশ হারে হ্রাস পেয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি আশঙ্কাজনকভাবে বাড়িয়ে তুলছি এবং ফলস্বরূপ, কোভিড ১৯-এর মতো ‘জুনটিক’ (প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত) রোগের ঝুঁকি বেড়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের বর্তমান ক্রিয়াকলাপ অব্যাহত রাখা হলে আমরা কেবল অন্যান্য প্রজাতির বিলুপ্তির কারণই হচ্ছি না, মূলত আমরা মানবজাতিরও চূড়ান্ত বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে সংবিধানে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

তিনি জাতির পিতার অবদার স্মরণ করে বলেন, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের প্রথম দিকেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের আদেশ কার্যকর করেন।

তিনি বলেন, জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত কনভেনশন বাস্তবায়নের জন্য আইন প্রণয়নকারী অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আমাদের সংসদ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ‘বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি অ্যাক্ট ২০১৭’ পাস করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের মোট স্থলভাগের ৫ শতাংশেরও বেশি এবং সামুদ্রিক জলভাগের প্রায় ৫ শতাংশ অঞ্চলকে ‘সংরক্ষিত ও পরিবেশগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল’ ঘোষণা করেছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)