সাতক্ষীরার আশাশুনিতে সাংবাদিক পরিচয়দানকারি চার চাঁদাবাজ গ্রেপ্তার, দুটি মোটরসাইকেল জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে এক নিকাহ রেজিষ্টারের কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদাদাবির অভিযোগে সাংবাদিক পরিচয়দানকারি চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহষ্পতিবার রাতে তাদেরকে উপজেলার বেউলা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে, এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেছেন নিকাহ রেজিষ্টার আসাদুজ্জামান সরদার।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বকচরা মোল্লাপাড়ার মোন্তাজ মোল্লার ছেলে আব্দুল মান্নান, একই গ্রামের আফছারউদ্দিন সরদারের ছেলে হাফিজুর রহমান, একই উপজেলার আদালতপুর চালতেতলা এলাকার আবুল কাশেম সরদারের ছেলে রবিউল ইসলাম ও সাতক্ষীরা শহরের কুখরালী এলাকার মোকিম হোসেনের ছেলে মোশাররফ হোসেন আব্বাস।

আশাশুনি উপজেলার বেউলা গ্রামের ওসমান গণি সরদারের ছেলে নিকাহ রেজিষ্টার আসাদুজ্জামান সরদার জানান, বৃহষ্পতিবার বিকালে আব্দুল মান্নান, মোশারফ হোসেন আব্বাস, হাফিজুর রহমান ও রবিউল নামের চার ব্যক্তি দু’টি মোটর সাইকেল যোগে তার বাড়িতে যান। এ সময় তারা নিজেদেরকে এক একটি নাম না জানা সংবাদপত্র ও অন লাইনের স্টাফ রিপোর্টার পরিচয়ে বাল্য বিবাহ দেওয়ার অভিযোগে তার কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন। টাকা না দিলে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া ও পত্রিকায় নিউজ করার হুমকিও দেন তারা। একপর্যায়ে তিনি তাদের বাড়িতে বসিয়ে রেখে জেলা রেজিষ্টারকে ফোন দেন। জেলা রেজিষ্টার বিষয়টি থানাকে অবহিত করার জন্য বলেন। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাক বিতন্ডাকালে স্থানীয় জনগন ছুঁটে এলে বেগতিক বুঝে ওই চার সাংবাদিক মোটর সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা তাদের মোটর সাইকেলের চাবি তুলে নেওয়ায় তারা বিল আড় দিয়ে ভো দৌড় দিয়ে পালিয়ে যান। এরপর তারা সাতক্ষীরা শহরে এসে মোটর সাইকেল ফিরে পেতে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করার উদ্যোগ নেন। ওই সময় আশাশুনি থানা পুলিশের মোবাইল পেয়ে তারা রাত ৯টার দিকে আবারও বেউলা গ্রামে তার (নিকাহ রেজিষ্টারের) বাড়িতে যান। এর কিছুক্ষণপর পুলিশ এসে চাঁদা দাবির অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ওই চার চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করেন। এ সময় জব্দ করা হয় তাদের ব্যবহৃত দু’টি মোটর সাইকেল।

শহরের বকচরা মোড়ের কয়েকজন ব্যবসায়ি জানান, গ্রেপ্তারকৃত ওই চার চাঁদাবাজ সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী পরিচয়ে জেলাব্যাপি ব্যাপক চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। এদিকে, এই চার চাঁদাবাজ গ্রেপ্তার হওয়ায় সাংবাদিক পরিচয়দানকারী অন্য চাঁদাবাজরা কিছুটা থমকে গেছেন বলে জানা গেছে।

আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় বেউলা গ্রামের নিকাহ রেজিষ্টার আসাদুজ্জামান বাদি হয়ে গ্রেপ্তারকৃত চার জনের নাম উল্লেখ করে শুক্রবার সকালে থানায় একটি মামলা (৫নং) দায়ের করেছেন। তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)