চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অব্যাহত, বেড়েছে মৃতের সংখ্যা

করোনাভাইরাস (2019-nCoV) এতদিন শুধু চীনে গুরুতর হলেও এবার এর বাইরের দেশগুলোতে আতঙ্ক ছেড়িয়ে পড়েছে। এরইমধ্যে ভাইরাসটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ইউরোপ-আমেরিকার ১২টি দেশে পৌঁছে গেছে। এমনকি আমাদের পাশের দেশ নেপালেও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩০০ ছাড়িয়েছে।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার পযর্ন্ত চীনে নতুন করে আরো ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০৬ জন।

বুধবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানায়, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল হুবেই প্রদেশেই রয়েছেন ৪০১ জন। নতুন মৃত্যুর ঘটনাও সবগুলোই এ প্রদেশে।

চীনে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৭১৫ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৪০৬ জন। দেশটির মূল ভূখণ্ডের বাইরে মারা গেছেন আরো ৪৮ জন। বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৯৬৭ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৭ হাজার ৪৭৬ জন।

অপরদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে আরও ৬০ জনের এই ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত সেখানে ৮৯৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৮ জন। ।

 ইরানে করোনা সংক্রমিত হয়ে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন ৪৭ জন। তবে মার্কিন সংবাদ সংস্থা এপি ও দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট এবং কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলছে ইরানে মৃতের সংখ্যা আরো বেশি, সেই সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়ে যেতে পারে।

জাপানি প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের আরো এক যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ওই প্রমোদতরীর চারজন প্রাণ হারিয়েছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই প্রমোদতরীর যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল।

গত ৩১ ডিসেম্বর হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই প্রথম এ ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এখন পর্যন্ত এটি বিশ্বের অন্তত ৩৩টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু। অনেক দেশই তাদের নাগরিকদের চীন ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায়, বেলজিয়াম, কম্বোডিয়া, কানাডা, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ভারত, ইতালি, জাপান, ম্যাকাও, মালয়েশিয়া, নেপাল, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, শ্রীলঙ্কা, সুইডেন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান এবং ভিয়েতনামে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ দিনে দিনে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে। মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত। কিছু রোগীর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, তাদের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ছে।’ এই রোগের কোনো প্রতিষেধক এবং ভ্যাকসিন নেই। মৃতদের অধিকাংশই বয়স্ক যাদের আগে থেকেই শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত জটিলতা ছিল।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)