মিয়ানমারের বর্বরতা বন্ধে ফের জাতিসংঘে প্রস্তাব পাশ

রোহিঙ্গা মুসলিমসহ সংখ্যালঘু বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিস্থিতি শিরোনামে একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে।

শুক্রবার পাশ হওয়া এই প্রস্তাবে, ২০১৭ সালের আগস্টে দেশটিতে মুসলিম সম্প্রদায় নিধনে অমানুষিক আচরণের কথাও উল্লেখ করা হয়।

এটি ছিল জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের ৫২তম বৈঠক। এখানে রেজ্যুলেশনের পক্ষে ভোট দেয় বিশ্বের ১৩৪টি রাষ্ট্র। বিপক্ষে ছিল মাত্র ৯টি। এবার ভোট প্রদান থেকে বিরত ছিল ২৮ দেশ।

মিয়ানমারে বর্বরতা বন্ধে এবং বাস্তুভিটা ত্যাগে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের সসম্মানে নিরাপদে নিজ বসতভিটায় ফিরে যাবার নিশ্চয়তার জন্যে বিশ্ব সম্প্রদায়ে বাংলাদেশের লাগাতার তদবিরের অংশ হিসেবে এই রেজ্যুলেশনও যৌথভাবে উত্থাপন করেছিল ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

গত ১৪ নভেম্বর জাতিসংঘের থার্ড কমিটিতে অধিকাংশ সদস্য-রাষ্ট্রের সমর্থনে এই রেজ্যুশেনটি পাশ হয়। পঞ্চম কমিটিতে জাতিসংঘের বাজেট নিয়ে সমঝোতার সময়েই ২৭ ডিসেম্বর মিয়ানমার প্রশাসনের ওপর চাপ প্রয়োগের অভিপ্রায়ে এই রেজ্যুলেশন উপস্থাপন করা হয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক মহলের সার্বিক সমর্থনের ব্যাপারটি পুনরায় দৃশ্যমান হলো বলে কূটনীতিকরা মনে করছেন।

তবে সাধারণ অধিবেশনে পাস হওয়া এ প্রস্তাব মিয়ানমারের জন্য কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা তৈরি না করলেও তা সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির ব্যাপারে সারা বিশ্বের মতামতকে প্রতিফলিত করছে।

একই অধিবেশনে মিয়ানমার পরিস্থিতির ব্যাপারে স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়া পরিচালনা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে অর্থ মঞ্জুরির সর্বসম্মত একটি সিদ্ধান্তও হয়েছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল ৩৯/২ রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বাধীন ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন তৈরি করেছে। তারই উত্তরসূরি হিসেবে স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়া বিদ্যমান রয়েছে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে জাতিগত নিধন, হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে পরবর্তী তিন মাসে বাংলাদেশ সীমান্তে আশ্রয় নেয় ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এর আগে ১৯৬৮ সাল থেকে বাংলাদেশে আশ্রিত রয়েছে আরো অন্তত চার লাখ রোহিঙ্গা। নতুন করে অনুপ্রবেশের পর সাম্প্রতিক সময়ে এখানে জন্ম নিয়েছে আরো প্রায় কয়েক লাখ শিশু।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)