শ্যামনগরে অবৈধভাবে বেড়ীবাঁধ কর্তন পাউ‘বোর পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি

শ্যামনগর উপজেলার দাতিনাখালী মাছুদ মোড় সংলগ্ন চুনানদীর ভয়াবহ ভাঙ্গন কবলিত ৫ নং পোল্ডারের ওয়াবদার বেড়ীবাঁধ একটি স্বার্থান্বেষী মহল সোমবার সকালে বেড়ীবাঁধ কেটে ওভার পাইপ বসানোর চেষ্টা করে। খবর পেয়ে শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদস্যরা পাইপ বসানো বন্ধ করে এবং বেড়ীবাঁধ কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নে দাতিনাখালী ভাঙ্গন কবলিত স্থানে বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের মৃত কাদের গাজীর ছেলে মুরশিদ ও মোশারফ ও একই গ্রামের মৃত এনছার গাজীর ছেলে রেজাউল সহ ৯-১০ জন অবৈধভাবে বেড়ীবাঁধ কেটে ওভার পাইপ বসানোর চেষ্টা করে। বাঁধ কাটার বিষয় তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যান বাবু ভবতোষ কুমার মন্ডল তাদেরকে বেড়ীবাঁধ কেটে ওভার পাইপ বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি কাউকে বাঁধ কাটতে বলিনাই।

জলাবদ্ধতার কারনে বেড়ীবাঁধের উপর দিয়ে ওভার পাইপ বসিয়ে অস্থায়ীভাবে পানি সরানোর কথা বলেছিলাম, তবে বাঁধের গায়ে কোন সষ্প করতে বলিনাই। খবর পেয়ে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খাযের এর নির্দেশে শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস ও মাসুদ রানা ঘটনাস্থলে গিয়ে বেড়ীবাঁধ কর্তনের দৃশ্য দেখে পাইপ বসানো বন্ধ করে দেন। এ বিষয়ে মাসুদ রানা বলেন, বেড়ীবাঁধ কাটা বন্দ করে দিয়েছি এবং কর্তনকারীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে। ৫ নং পোলডারের সংশ্লিষ্ট এস ও শাহনাজ পারভীন অসুস্থ থাকায় আগামীকাল তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

উল্লেখ্য দাতিনাখালী ৫ নং পোল্ডারে ভয়াবহ নদীভাঙ্গন এলাকায় ইতিপূর্বে সরকারী ও বে-সরকারীভাবে বাঁধ রক্ষার্থে লক্ষ লক্ষ টাকার কাজ করা হয়েছে। সম্প্রতি সরকারীভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু ভর্তি জিও বস্তা ফেলানো হয়েছে। ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময় শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস ও মাসুদ রানা ঝড়ের রাত্রে জিও বস্তা ফেলিয়ে কোন রকমে বাঁধ রক্ষা করা হয়েছিল। বর্তমানে সেখানে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে মাত্র ৮-১০ ইঞ্চি রয়েছে। এমন অবস্থার মধ্যে সেই এলাকায় বেড়ীবাঁধ কর্তন করে ওভার পাইপ বসানো কোন মানুষের কাজ হতে পারে না।

শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে সমগ্র উপজেলার উপকূলীয় বেড়ীবাঁধে আনুঃ ৩ শত ওভার পাইপ অবৈধভাবে বসানো আছে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল ধায়ের জানান, উপকূলীয় বেড়ীবাঁধে এক দিয়ে পাইপগুলো বসানো হয়নি। যখন বসানো হয়েছে তখন আমি সাতক্ষীরাতে চাকুরী করিনাই। সবে মাত্র কৈখালী ইউনিয়নে বেড়ীবাঁধে অবৈধভাবে ওভার পাইপ বসানোর জন্য ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অবৈধভাবে বসানো সকল পাইপ মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। তাছাড়া বর্তমানে কেউ বেড়ীবাঁধ কর্তন করে পাইপ বসানোর চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)