সাকিবকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল জুয়াড়ি আগারওয়াল!

সাকিব আল হাসানকে এক বছরের জন্য সব ধরণের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, জুয়াড়ির কাছ থেকে তিনবার প্রস্তাব পেয়েও সেটি বোর্ড বা আইসিসি কাউকেই জানাননি তিনি। এতে যে আইন ভঙ্গ হচ্ছে, এটি সাকিব অবশ্যই জানতেন। কিন্তু তবুও কেনো সব চেপে যাওয়া? এর পেছনে জুয়াড়ির কোন হাত ছিলো না তো?

স্বাভাবিক দৃষ্টিতে সবাই অপরাধীর দিকেই আঙ্গুল তুলে রাখে। সাকিব আইন ভঙ্গ করেছেন, এটি সত্য ও প্রমাণিত। এক্ষেত্রে তার পক্ষে সাফাই গাওয়ার কিছু নেই। তবে সাকিবকে সর্বদা অন্যায়ের বিপক্ষে লড়তে দেখা যাওয়ায় এমন ঘটনা অবাক করতে বাধ্য।

আইসিসির দুর্নীতি দমনের আইন তো খুব ভালো করেই জানেন সাকিব। আইসিসির বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি বিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। অতীত বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১০-১১ বছর আগেও যখন জুয়াড়িদের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েছেন, আকসুকে জানাতে দুবার ভাবেননি। অথচ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক যুগের বেশি সময় কাটিয়ে দেয়ার পরও এবারের বিষয়টি আকসুকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেননি সাকিব! তাও এমন একজন জুয়াড়ির প্রস্তাব, যিনি আইসিসির কালো তালিকাভুক্ত!

কাজেই এবার সাকিব কেনো চুপ থাকতে পারেন এই প্রশ্নের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চিন্তা উদ্রেক করার মতো একটি তথ্য।

আইসিসি প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীপক আগারওয়াল নামের ব্যক্তিটিই সেই জুয়াড়ি যার সঙ্গে সাকিবের যোগাযোগ হয়। জুয়াড়ি ব্যাক্তিরা সাধারনত প্রচন্ড ক্ষমতাশালী হন বা এমন ব্যাক্তিদের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতা থাকে। আন্ডারওয়ার্ল্ডেও তাদের যোগসূত্র থাকে। ফলে নিজেদের কথা না মানলে অথবা তথ্য বাইরে ফাঁস করলে হত্যার হুমকি দিয়ে থাকে তারা। সাকিবের সঙ্গেও যে এমন কিছু হয়নি, তা কি নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারবেন?

দক্ষিণ আফ্রিকার হান্সি ক্রোনিয়ের কথা কে না জানে। ফিক্সিং কেলেংকারিতে সব প্রকাশ করার পর তার মৃত্যু হয় প্লেন দুর্ঘটনায়। যা আজও রহস্য হয়ে আছে। এছাড়া ২০০৭ বিশ্বকাপে পাকিস্তান কোচ বব উলমারকে নিজের হোটেলরুমে রহস্যজনকভাবে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ রহস্যের উত্তর মেলেনি আজও। ২০১১-১২ মৌসুমে ভারতের ঘরোয়া লিগে দুইজন ক্রিকেটার আত্মহত্যা করেন। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সূত্রানুসারে, তাদের এই কাজের পেছনে মূল কারণ ম্যাচ ফিক্সিং। অবাক করার বিষয়, সেই ক্রিকেটারদের নানাভাবে চাপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা জুয়াড়ির নামও আগারওয়াল।

নিজেদের কুকীর্তি বা অপপ্রস্তাব ফাঁস না করার জন্য এভাবে প্রায়ই হুমকি দিয়ে থাকে জুয়াড়ি চক্র। ফলে চাইলেও মাঝে মাঝে চুপ না থেকে উপায় থাকে না। হয়তো সাকিবকে কিছু প্রকাশ না করার চাপ দিয়েছিলেন দীপক আগারওয়াল।

আকসুকে বললে ক্ষতি করার কোন হুমকি দেয়াও অস্বাভাবিক নয়। দীপকের হোয়াটস অ্যাপে কিছু মেসেজ ডিলিট অবস্থায় পেয়েছে আইসিসি। হয়তো সেখানে ছিল এমন হুমকি। যদিও এ কথার স্বপক্ষে বাস্তব কোনো প্রমাণ নেই।

ঘটনা যেটাই হোক, সাকিব আল হাসান দোষী প্রমাণিত। নিজের ভুল স্বীকার করে শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছেন তিনি। আপাতত এক বছর ভালোবাসার ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে থাকবেন টাইগার অলরাউন্ডার। তবে এরপর দোর্দন্ড প্রতাপে ফিরবেন তিনি, আবারও গায়ে চড়াবেন লাল সবুজ জার্সি, এই প্রত্যাশাই সকলের।

সূত্র:ডেইলি বাংলাদেশ

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)