আশাশুনিতে ডিস লাইন কেটে ৫ লাখ টাকা ক্ষতি করে উল্টো মামলায় তিন ব্যবসায়ীকে হয়রানি

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ডিস লাইন কেটে মালামাল লুট করার পরও প্রতিপক্ষ আমাদের তিন ব্যবসায়ীর নামে মামলা করেছে। আর এই মামলার তদন্তের নামে যা হয়েছে তা অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে একথা বলেন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার মিত্র তেঁতুলিয়া গ্রামের ডিস ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন ২০১৪ সাল থেকে দেবহাটার পারুলিয়া গোল্ডেন ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের সাথে জড়িত থেকে তিনি সুনামের সাথে ডিস ব্যবসা করে আসছেন। আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি ইউনিয়নের সকল এলাকা, কুল্লা ইউনিয়ন এবং দরগাহপুরের কিছু এলাকায় আমার ডিস ব্যবসা চলে আসছে। গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ২৫০ জন। সম্প্রতি শাহনগর থেকে যদুয়ারডাঙ্গা টেংরাখালি পর্যন্ত নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পর জনৈক অমল তালুকদার, দীপংকর মন্ডল, অমৃত সানা, রাহুল মন্ডল ও কমলেশ বিশ্বাস আমার কোম্পানির দশ কিলোমিটার দীর্ঘ তার ও ২০ টি নুডের মেশিন কেটে নিয়েছে। এর মূল্য কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকা। একই স্থানে তারা খুলনার লাইন নিয়ে বাঁকা বাজার থেকে সাতক্ষীরা ভিশনের নাম ব্যবহার করে ডিস চালু করেছে। এতে আমার ডিস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সংকটে পড়েছি। স্থানীয় চেয়ারম্যান এ বিষয়টি অবগত হয়েছেন ।তিনি এ ব্যাপারে অমল তালুকদারসহ অন্যদের ডেকে এনে ক্ষতিপূরণ দিয়ে আমার ব্যবসা সচল করার জন্য বলে দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাদ্দাম আরও জানান তার ডিস লাইন বিচ্ছিন্ন করায় গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা এর প্রতিবাদ করেন । সম্প্রতি তারা এর প্রতিবাদে আশাশুনির প্রতাপনগর সড়কের কাদাকাটি এলাকা জুড়ে মানববন্ধন করেন। এসময় তারা আমার মালামাল ফেরত দেওয়ার জন্য অমল তরফদারসহ অন্যদের তাগিদ দেন। তারা কাদাকাটি ইউপি চেয়ারম্যান দীপংকর কুমার সরকারের কাছে এসব মালামাল ফেরত দেবেন বলে জানালেও আজ অবধি তারা তা দেয়নি। এ নিয়ে আমি বারবার অনুরোধ করার পরও তারা কথা রাখেনি। এ নিয়ে মানববন্ধনের খবর পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। চাঁদাবাজির কোনো ঘটনা এলাকায় ঘটেনি উল্লেখ করে এলাকার বাসিন্দারা গনস্বক্ষর দিয়েছে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান দীপংকর সরকার, কয়েকজন মেম্বর, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং ইউনয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদক এই গনস্বাক্ষর পত্রে সই করেছেন।

সাদ্দাম আরও জানান যারা তার পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতি করে ব্যবসা লন্ডভন্ড করে দিয়েছে তারা বিষয়টি ভিন্নখাতে নেওয়ার লক্ষ্যে তাকেসহ তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে সাতক্ষীরা আদালতে। এ মামলায় আসামি করা হয়েছে সাদ্দাম হোসেন, অভিজিত সানা ও রাখাল মন্ডলকে। গত ২৭ আগস্ট তারিখে এ মামলা করা হয় আশাশুনি আমলি আদালতে। তিনি বলেন আমরা জানতে পেরেছি বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতের ওপর জুডিসিয়াল তদন্তের দায়িত্ব দেন। এজন্য আগামি ৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য ছিল। পরে আদালত ২০ অক্টোবর নতুন দিন ধার্য করেন।
সাদ্দাম হোসেন বলেন গত ৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষীদের সাতক্ষীরায় ডেকে এনে তদন্ত করা হয়। অথচ ধার্য তারিখ ২০ অক্টোবর কেটে দিয়ে ফের ১২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়। আমরা কাগজপত্রে দেখতে পেরেছি এই তারিখ পরিবর্তনে কলম দিয়ে কাটাকাটি ও ঘষাঘষি করা হয়েছে। তিনি বলেন মামলায় যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার মধ্যে দেড় লাখ টাকার চাঁদাবাজির কথা বলা হয়েছে।্ এতে যারা ব্যবসায়িক অংশীদার তারাই মামলার বাদি, তারাই মামলার সাক্ষি। তাদের বাড়ির কাছে কথিত এই চাঁদাবাজির কথা বলা হয়েছে। তাদের কাছে মাসিক ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

সাদ্দাম জানান মামলাটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক। এর মধ্যে শুধু মিথ্যা কথা রয়েছে। আমি এ মামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সাথে সাথে মামলাটি তদন্তের নামে যেসব মিথ্যা তথ্য হাজির করা হয়েছে তা প্রত্যাহারেরও দাবি জানাচ্ছি। আমি আমার ডিস লাইনের ক্ষতিপূরণ চাই। একই সাথে গ্রাহকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমার ডিস ব্যবসা যাতে ফের চালু করতে পারি তার ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অভিজিত সানা ও রাখাল মন্ডল, নিশিকান্ত সরদার, মঙ্গল সরকার, অমলকৃষ্ণ সরকার, সুজয় কুমার মন্ডল, কুমারেশ সানা, নিরঞ্জন কুমার বাছাড়, মন্টু বিশ্বাস, হরসিত বিশ্বাস, বিপ্লব মন্ডল, তন্ময় মন্ডল , রাজু সানা প্রমূখ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)