ভোমরা স্থলবন্দর যানজটমুক্ত করায় বিশেষ মহলের গাত্রদাহ ,বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কুটোক্তির অভিযোগ

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের নিত্যদিনের যানজট,মুক্ত করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ ভোমরাস্থল বন্দর শাখার নেতৃবৃন্দ। সম্প্রতি সংগঠনটির প্রচেষ্টায় ভোমরা স্থলবন্দর যানজট মুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিকলীগ ভোমরাস্থল বন্দর শাখার এই মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সংগঠনের ১৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজ করে যাচ্ছে।

এদিকে, যানজটমুক্ত করার মহতি উদ্যোগের কারণে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও ব্যক্তির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। যার নেপথ্যে আছে, চাঁদাবাজি, চোরাচালানসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ড। ১৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনটি তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভোমরা থেকে বিতাড়িত করতে মিশনে নেমেছে একটি মহল।
এরই জের ধরে গত সোমবার বিকাল ৪ টায় ভোমরা স্থল বন্দরের দুইজন বিএনপি পন্থি ব্যবসায়ী,দুই জন শ্রমিক নেতা,স্থানীয় আ’লীগ নেতা ও কতিপয় ব্যক্তিকে নিয়ে গোপনে সভা ডাকেন ভোমরাস্থল বন্দরের শীর্ষস্থানীয় এক ব্যবসায়ী নেতা।

কিন্তু তার ডাকা সভা ভেস্থে যায় স্থানীয় এক আ’লীগ নেতার বিরোধিতায়। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কোন অবমাননা কর বক্তব্য শুনতে রাজি হননি বরং তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ নিয়ে বলেন,জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র করলে তার ফল ভালো হবে না।

এব্যাপারে বুধবার (৭ আগষ্ট) সকালে সংগঠনের বীর মুক্তিযোদ্ধা জবেদ আলী, মোঃ নূর আলী, মোঃ সৈয়দ আলীসহ ৮/১০ জন মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিকলীগ ভোমরাস্থল বন্দর শাখার প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিন পর ভোমরা স্থলবন্দর যানজটমুক্ত হয়েছে। চাঁদাবাজ ও দালাল চক্রের দৌরাত্বে অবরুদ্ধ ও জিম্মি ছিল ভোমরা স্থলবন্দর সড়ক। দীর্ঘ সময় যানজটে ভোগান্তীর শিকার হতে হতো পথচারী, ভারতগামী যাত্রী, পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন।

এ যানজট নিরসনে ভূমিকা রেখেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, ভোমরা সড়ক ও পরিবহন শ্রমিক লীগ এবং আওয়ামী তরুনলীগ ও এলাকার সচেতন মহলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ভোমরা স্থল বন্দরে যানজট নিরসনে সকল বাঁধাকে উপেক্ষা করে ভোমরা স্থলবন্দর এলাকা যানজট মুক্ত করেছেন এবং জনস্বার্থে মহতী উদ্যোগে যানজট নিরসন সম্ভব হয়েছে।

সেই সাথে সংগঠনগুলি নিজ নিজ উদ্যোগে মানব সেবায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছেন। স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন ভোমরা স্থল বন্দর এলাকা থেকে চাঁদাবাজ ও দালালদের বিতাড়িত করতে পারলে আর কখনও ভোমরা এলাকা যানজটের কবলে পড়বেনা।

সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা আরো জানান, আমাদের এই কাজের কারণে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ঐ অসাধু চক্রটি যে কোন মূল্যে আমাদের অবস্থান থেকে সরানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফুর ও ওয়াহেদ জানান, আমাদের কর্মকান্ডকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য গত সোমবার ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোঃ সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান নাছিম এর ডাকে ভোমরা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি ওহিদুল ইসলাম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম, কর্মচারী এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পরিতোষ, ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতির সাধারন সম্পাদক শওকাত হোসেন ও ভোমরা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আনারুল ইসলামসহ ১০/১২ জন কে নিয়ে একটি গোপন সভা করেন।

সেখানে আলোচনার বিষয় ছিলো কি ভাবে ভোমরা থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিতাড়িত করা যায়। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্রে বাঁধা হয়ে দাড়ায় উক্ত সভায় উপস্থিত থাকা ভোমরা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আনারুল ইসলাম। সভা চলাকালে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কুটোক্তিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন এবং বলেন, তারা আমাদের দেশ উপহার দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কোন কথা শুনতে চাই না একথা বলেই তিনি সভাস্থল ত্যাগ করেন।

এব্যাপারে ভোমরা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আনারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আমাকে মিটিংয়ে ডাকা হয়েছিলো কিন্তু আমি বেশি সময় ছিলামনা। মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে কুটোক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতীর শ্রেষ্ট সন্তান। সভায় আমি মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ নিয়ে বলেছি,তাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে আমি তাদের সাথে আছি।
এব্যাপারে ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোঃ সাধারন সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান নাছিম’র ব্যবহৃত মুঠোফোনে বুধবার বিকালে কয়েকবার কল দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে, ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী এ্যাসোঃ এর সভাপতি পরিতোষ জানান, মিটিং হয়েছে। কিন্তু সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করা হয়নি বা তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার কুটোক্তি মূলক বক্তব্য রাখা হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরে বন্দরের নাইট গার্ডের টাকাসহ বিভিন্ন উন্নয়নের টাকা আমাদের লোকজন তুলতো হটাৎ করে সংগঠনটি ও মুক্তিযোদ্ধারা বিষয়টি উল্টোপাল্টা করে ফেলেছে সেটি কিভাবে সমাধান করা যায় তার জন্য সভা ডাকা হয়েছিলো।
এব্যাপারে জাতীর শ্রেষ্ট সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা সদর এমপি,জেলা আ’লীগের সভাপতি/সাধারন সম্পাদকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)