তালায় উঠতে শুরু করেছে লিচুর ছোট ভাই আঁশফল

বাজারে উঠতে শুরু করেছে লিচুর মত দেখতে,লিচুর ছোট ভাই আঁশফল । এই সময় লিচুর মতো গ্রাম বাংলায় আঁশফল নামে এক ধরনের ফল দেখতে পাওয়া যায়। অনেকের কাছে এটি ‘কাঠলিচু’ বা ‘লংগান’ নামে পরিচিতি। এই ফল থোকায় থোকায় লিচুর মতোই ঝুলে থাকে গাছে। এটি দেখতেও অনেকটা লিচুর মতো গোলাকার। তবে আকারে ছোট এবং এর রসাল অংশ খুবই কম। প্রকাশ,আঁশফল এক প্রকার লিচু জাতীয় সু-স্বাদু ফল। আঁশফল গাছ মধ্যমাকারের চির সবুজ বৃক্ষ। যা ৬ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। বেলে মাটিতে এই গাছ জন্মে। আঁশফল গ্রাম বাংলার

ঐতিহ্যবাহী ফল। একে বলা হয় গরীবের লিচু। ফল গোল আকারের, শাঁস সাদা, খুব রসালো ও মিষ্টি। এক সময় দেশের পূর্ব দক্ষিণাঞ্চলের চাষ উপযোগী এই আঁশফল খেয়ে আষাঢ় উদযাপন করেছে বাঙালি। আপেল, কমলা, আঙ্গুর, লিচুতে আশক্ত হয়ে এই ফলটির কদর হারিয়েছে। স্থানীয় এই ফলটির গুণগতমান তেমন একটা ভাল না হওয়ায় এর কদর কমেছে। আঁশফল লিচু পরিবারের একটি সদস্য। ফলের উপেরভাগ মিশ্রণ, ফলের রং বাদামি, আকার গোল। লিচুর চেয়ে অনেক ছোট হলেও ফলের শাঁস অবিকল লিচুর মত। ফল খেতে লিচুর মত বা লিচুর চেয়েও মিষ্টি।

ফলের শাঁস সাদা চকচকে। আঁশফলের বিজ গোলাকার চকচকে কালো এবং শাঁস বীজকে আবৃত করে রাখে। যা সহজে আলাদা করা যায়।
আঁশ ফলের বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা যায়। বীজ থেকে উৎপাদিত গাছ হুবহ মাতৃগুণ বহন করে না। আর ফল ধরতে দীর্ঘ সময় লাগে। এটি গুটি কলম করে এর বংশ বিস্তার করা যায়। সম্প্রতি বাংলাদেশ আঁশফল বেশ কিছু উন্নত মানের যাত প্রবর্তনের মাধ্যমে বিস্তার লাভ

করেছে। বারি আঁশফল-১ ও বারি আঁশফল-২ নামে উন্নত জাত বাংলাদেশে সর্বত্র মুক্তায়ন করা হয়েছে। আঁশফলে বিভিন্ন খনিজ উপাদান, শর্করা ও ভিটামিন সি এর প্রচুর উপাদান পাওয়া যায়। আঁশফলের শুকানো শাঁস থেকে ভেজস ঔষধ তৈরী করা যায়। অবসাদ দূর করতে এর দারুণ সু-নাম রয়েছে। হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা ও সক্রিয় রাখতে আঁশফল আপকারী ভূমিকা পালন করে। সরজমিনে,চলতি মৌসুমে তালা উপজেলার

আঁশফলের ব্যাপক ফলন হয়েছে। উপজেলার শ্রীমন্তকাটি,মাগুরা,দোহার, আটুলিয়া সহ প্রায় সকল গ্রামে ছড়ানো ছিটানো আঁশফলের গাছ রয়েছে। আঁশফল গ্রামঞ্চাল ও বাজার মিলিয়ে বিক্রি হচ্ছে ১শ টি ফল ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এলাকার এক একটি আঁশফল গাছ পাইকারী ৮শ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা গাছ থেকে আঁশফল পেড়ে স্থানীয় বাজারে খুচরা বিক্রি করছে।

আঁশফল ব্যবসায়ী উপজেলার আব্দুর রহিম জানান, আঁশফল পাঁকা শুরু হলে তাড়া তাড়ি না পাড়লে ঝরে পড়ে। তাছাড়া বাদুর একবার টের পেলে দল বেঁধে এক রাতেই সব ফল খেয়ে ফেলে। এ জন্য অনেকেই আঁশফল গাছে নেট দিয়ে ঢেকে রাখছে বাদুরের হাত থেকে রেহায় পেতে। আঁশফলের স্বাদ আগস্ট মাস পর্যন্ত পাওয়া যায় বলে বর্তমানে বাজারে এর কদর বেড়েছে। এর ফলে ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছে। এ ব্যাপারে

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, এলাকার আঁশফলের গুণগতমান খুব বেশি ভাল না হলেও চাহিদা রয়েছে প্রচুর। পরিত্যাক্ত জায়গায় আঁশফলের আবাদ করা যায় এবং কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এ জন্য এলাকার কৃষকদেরকে আঁশফল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)