সাতদিনেও সন্ধান মেলেনি কালিগঞ্জে অপহৃত রাফিজার

কালিগঞ্জের দিয়া গ্রামের রাফিজা নামক এক গৃহবধূ ১৯ জুন অপহরণ হয়। অপহরণের ৬ দিন পর গত ২৫ জুন রাফিজার ভাই আল আমিন হোসেন বাদী হয়ে রাফিজার স্বামী সাগরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ), ৭/৩০ ধারায় ১৮ নং মামলা দায়ের করে। রাফিজা দেয়া গ্রামের আরিফুজ্জামান সাগরের স্ত্রী ও শ্যামনগর উপজেলার সোরা গ্রামের বাকপ্রতিবন্দী অসহায় হাফিজুর রহমান মোল্যার কন্যা।

কালিগঞ্জ থানার মামলা সুত্রে ও ঘটনার অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় ৯/১০ মাস আগে কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের দেয়া গ্রামের নাজিমুদ্দীনের ছেলে আরিফুজ্জামান সাগরের সাথে শরিয়ত মোতাবেক রাফিজার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সাগর ও তার পরিবারের সদস্যরা রাফিজাকে মোটা অংকের টাকা যৌতুকের দাবীতে প্রায়ই নির্যাতন করে আসছিলো। রাফিজার অসহয় প্রতিবন্ধী পিতা যৌতুকের টাকা না দিতে পারায় নানান ফন্দী আটতে থাকে। একপর্যায়ে সুকৌশলে রাফিজা কে আড়াল করে বাড়ি থেকে না বলে চলে গেছে মর্মে প্রচার করতে থাকে। ঘটনাটি ১৯ জুন ২০১৯ তারিখের। রাফিজা’র ভাই আল আমিন অভিযোগ করে বলেন ঘটনার দিন সাগর ও তার দলবল রাফিজাকে অপহরণ করে অজ্ঞত স্থানে আটকে রেখেছে। এবং অপহরণের ঘটনাটি ভিন্নখাতে নিতে অপ প্রচার করছে।

মামলার বাদী তার মামলায় আরও বলেন,আসামীরা পরিকল্পিত ভাবে রাফিজাকে আড়াল করে রেখেছে। আটক করে রিমান্ডে নিলেই তাদের মাধ্যমে রাফিজা উদ্ধার হবে । স্বামী সাগর নিজেই রাফিজা নিখোঁজের বিষয়টি বেশি প্রচার করছে। এমনকি নিখোঁজ হওয়ার প্রচারের সাথে সাথে সাগর কালিগজ্ঞ থানায় একটা মিসিং ডায়েরী করে। এবং তার বাহিনীকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে নির্দেশ দেয়।

এছাড়াও বাদী পক্ষের সর্বক্ষণ দৃষ্টিতে রাখাসহ বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি দেখানোর ও অভিযোগ করেন। অপর দিকে রাফিজার ভাই একটি অভিযোগ দায়ের করে। অনুসন্ধানে আরও জানাগেছে, রাফিজা আরিফুজ্জামান সাগরের ২য় স্ত্রী। তার ১ম স্ত্রী পরকিয়ার ফাঁদে পড়ে অন্যের হাতধরে চলে গেলে রাফিজার সাথে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়। বেশ কিছু দিন যাবত সাগর তার ১ম স্ত্রীর সাথে পুনরায় সম্পর্ক তৈরি করে এবং তাদের মেলা মেশার ছবি মোবাইলে ধারণ করে রাফিজাকে দেখালে রাফিজা প্রতিবাদ করে। তাতেই সাগর রাগান্বিত হয়ে রাফিজাকে তার জীবন থেকে সরিয়ে দেয়ার কৌশল খুজতে থাকে। এ ঘটনা রাফিজা তার মাকে জানালে সাগর ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দিন রাফিজাকে ব্যাপক মারপিট করে বলে জানান রাফিজার মা ।

ঘটনার বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুর রহমান খাঁনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রকৃত ঘটনার তদন্ত, ভিকটিম উদ্ধার ও আসামী গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে। খুব দ্রুত ভিকটিম উদ্ধার ও দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)