শোভনালীর মোনায়েম হত্যা:প্রকাশ্য ঘুরে বেড়ালেও কেন গ্রেফতার হচ্ছে না মুল আসামিরা?

আশাশুনিতে মৎস্য ঘের দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় মোনায়েম হোসেন গাইনকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় কেন গ্রেফতার হচ্ছেনা হত্যার সাথে জড়িত ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা? এ প্রশ্ন এখন সকলের।

এই মামলার এজহারের বাইরে থাকা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী-সরাসরি হত্যার সাথে জড়িত আশাশুনির বসুখালী গ্রামের সামছুর গাজীর ছেলে নুরুজ্জামান কালিগঞ্জের ইন্দ্রনগর গ্রামের মৃত মানিক আলী পাড়ের ছেলে আব্দুর রউফ পাড়, কুরবান পাড়ের ছেলে আব্দুল গফুর পাড়, আব্দুর ছাত্তার পাড়ের ছেলে নূর ইসলাম, জোহর আলী পাড়ের ছেলে শাহিনুর পাড় তার ভাই চান্নু পাড়, মৃত নওশের আলী গাজীর ছেলে সবুর গাজী, রহিম বক্সের ছেলে রহমান বক্স পাড়, ফেরাজতুল্লাহ পাড়ের ছেলে রেজাউল পাড়, সূবর্ণলতা গ্রামের রহমত গাজীর ছেলে ফজর আলী গাজী, তাদর্তোর ছেলে শান্ত, কাজলা গ্রামের এবাদুল গাজীর ছেলে ইসরাইল গাজী, ভাঙ্গালমারী গ্রামের আনসার আলীর ছেলে মুর্শিদ, কাশিবাটি গ্রামের আরশাফ আলী মীরের ছেলে হাবিব মীর। এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকায় কয়েকবার উপযুক্ত তথ্য নির্ভর সংবাদ প্রকাশিত হলেও এখনও গ্রেফতার হয়নি এই মূল আসামিরা।

জানা যায়, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতাদের আশ্বাসে এজহারের বাইরে থাকা মূল হত্যা কারিরা এলাকায় এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। সুত্রে প্রকাশ, মোনায়েমের মূল হত্যাকারীদের নামে আশরাফ মীর, আবুল, এসহাক, আবুল হত্যা মামলাসহ নাসকতা, অস্ত্র, ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এসব খুনিদের নামে এতো গুলো মামলা থাকারপরও আবার নতুন করে টাকার বিনিময়ে তারা মোনায়েম হোসেনকে হত্যা করে।

এদিকে সচেতন মহল বলছে তারা কি প্রশাসনের থেকে বেশি শক্তিশালি? তানাহলে হত্যা করেও হত্যাকারিরা কিভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়?

পরিচয় না দেওয়া এক সাংবাদিকের সাথে গল্পে গল্পে ভাড়াটিয়া এক কিলার বলেন, শোভনালীর বালিয়াপুর খোলচক বিলের ১৫ বিঘা ওই ঘেরের দাবিদার স্থানীয় এক প্রাক্তন ইউপি সদস্য একাধিক মামলার আসামী বিএনপি নেতা হারুন ওই দিন আমাদের মোটা অংকের টাকা দেয়।

উল্লেখ্য: পূর্বে বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদে প্রকাশ হয় সন্ত্রাসীরা ঘটনার আগের রাতে বসুখালী গ্রামের আটন (মাছ ধরার খাঁচা) ব্যবসায়ী কাছেম আলী গাজী ও নুরুজ্জামান গাজীর বাড়িতে অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে অবস্থান করেছিলো। এবং মামলার স্বাক্ষী মুসছুর গাজীসহ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী মামলার বাইরে থাকা হত্যাকারীদের কে ঘটনার আগের দিন রাতে ও ঘটনার দিন সেখানে মোনায়েম হোসেন কে হত্যা করতে দেখে ।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, বালিয়াপুর মৌজার ২৬ সি এস নং, ৬৬ নং হাল, ৩২ নং জেএল ও খুলনা জিলার এই জমির মলিক ছিলো রামচরণ ঘোষ, ঠাকুর দাশ ঘোষ, লাল মোহন ঘোষ, মনি গোপাল ঘোষ, উভয়ের পিতা উপেন্দ্রনাথ ঘোষ, বশিরহাট ২৪ পরগোনা, ভারত। তেজেন্দ্রনাথ, হরেন্দ্র নাথ, জিতেন্দ্রনাথ উভয়ের পিতা জ্ঞানেন্দ্রনাথ। এদের থেকে ৪৫০ বিঘা জমি ক্রয়শুত্রে মালিক ৯৮/২ খতিয়ানের খুলনা জিলার বালিয়াপুর মৌজার জে এল নং-৩২ ফজলুর রহমান সরদার, বজলুর রহমান সরদার উভয়ের পিতা মৃত আজিজার রহমান সানা। আসিয়া খাতুন স্বামী ফজলুর রহমান, জবেদা খাতুন স্বামী নুরুল ইসলাম সর্বসাং আশশুনি, সাতক্ষীরা।

বিতর্কিত জমির ৫৭১ নং খতিয়ানের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার বালিয়াপুর মৌজার ১২ নং জেএল এর বর্তমান পিন্ট পর্চার, এস এ খতিয়ান নাম পত্তন ও খাজনা দাখিলার মালিক আজিজ মোল্যা, হামিজুদ্দিন মোল্যা, মাহমুদ আলী মোল্যা, মোকছেদ মোল্যা, আনছার উদ্দিন মোল্যা ও ফজলুর রহমান সরদার, বজলুর রহমান সরদার উভয়ের পিতা মৃত আজিজার রহমান সানা। আসিয়া খাতুন স্বামী ফজলুর রহমান, জবেদা খাতুন স্বামী নুরুল ইসলাম, গোহর আলী মোড়ল, বাবুর আলী মোড়ল, সাহেব আলী মোড়ল, সোনা মোড়ল সর্ব পিতা শাহাবুদ্দিন মোড়ল আশাশুনি, সাতক্ষীরা।

মূলত উল্লেখিত এই জমি নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে কিন্তু মোনায়েম হত্যা মামলার এজহারে বাদী রুহুল আমিন গাইন উল্লিখিত বালিয়াপুর মৌজার ৬৬ খতিয়ানের ৩২ জেএল নং এর ২৩,১৯, ২০, ২২, ২৬ নং দাগ উল্লেখ করে। কিন্তু বিরোধ পূর্ণ জমির দাগ নং ১৯৩৯, ১৯৬০, ১৯৬২, ১৯৬৬। মুলত বিরোধ পূর্ণ জমির দাগ খতিয়ান পরিবর্তন করে প্রকৃত খুনিদেরকে এজহারের বাইরে রাখা হয়েছে।

এদিকে স্বাক্ষীসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা যেসব খুনিদেরকে প্রকাশ্যে হত্যা করতে দেখেছে, আর যারা আড়ালে থেকে মোনায়েম হোসেন কে হত্যার পরিকল্পনা করেছে গ্রেফতার পূর্বক সকল খুনিদের উপযুক্ত শাস্তি হয় সে লক্ষে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে এলাকার সচেতন মহল জোর দাবী জানিয়েছেন ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)